পাটকেলঘাটা থানার ওসি মোল্লা জাকির হোসেন জানান, রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভৈরবনগর এলাকায় এ দুর্ঘটনায় আরও সাতজন আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের ইউসুফ সরদারের ছেলে সাইদুর রহমান (৩৫), মনিরুজ্জামানের ছেলে আশিকুজ্জামান (১২), মেয়ে মিম খাতুন (৫), মনিরুজ্জামানের মা আকলিমা বেগম (৪৬), শাহিন হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন (৮) ও হাজী মোহম্মদ হোসেনের স্ত্রী নূর বানু (৪৫) ।
রাতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সারি বেঁধে রাখা ছয়টি লাশ ঘিরে চলছে স্বজনদের আহাজারি।
দুর্ঘটনায় দুই সন্তান হারানো মনিরুজ্জামানের স্ত্রী রোজিনা আক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার চাচা শ্বশুর খুলনার সাংবাদিক এলাহী বক্সের মৃত্যুর খবরে মঙ্গলবার দুপুরে কালিগঞ্জ থেকে একটি পিকআপ ভাড়া করে তারা ১৬ জন আত্মীয়-স্বজন খুলনায় যান।
এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জনের মৃত্যু হয়। পরে আহত অবস্থায় ছয়জনকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে দুই সন্তান আশিক আর মিমের লাশের পাশে বসে রোজিনা আক্তার কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, “আমি কি নিয়ে বাড়িতে যাব। আমার দুই কোলের মানিককে হারালাম। আমার শ্বাশুড়িকে নিয়েও বাড়িতে ফিরতে পারলাম না।… লাশ দেখতে গিয়ে আমার ছেলে-মেয়ের লাশ নিয়ে ফিরতে হচ্ছে।”
কালিকাপুর গ্রামের সাইদুর রহমানকে চোখের সামনেই মরতে দেখেছেন তার স্ত্রী ওবিয়া খাতুন। লাশের পাশে তিনি বসে ছিলেন শোকে পাথর হয়ে, চোখে পানিও নেই।
আহতদের মধ্যে চারজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- কালিগঞ্জ উপজেলার তালতলা গ্রামের লিয়াকত আলী (৬০), কালিকাপুর গ্রামের আশরাফুজ্জামান খোকন (৪৫), মোহম্মদল আলী (৬০) ও রেবেকা খাতুন (৪০)। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো. ইফতেখার হোসেনসহ স্থানীয় প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ছুটে যান হাসপাতালে। তারা নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন, আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন।