টাকা আত্মসাতের চেষ্টা, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আটক ৩

নেত্রকোণার খালিয়াজুরিতে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করায় এক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নেত্রকোণা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2018, 04:30 PM
Updated : 15 March 2018, 04:30 PM

বৃহস্পতিবার বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা এ তিনজনকে খালিয়াজুরি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে আটকে রাখেন।

পরে ইউএনওর হস্তক্ষেপে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাতার মোট ১৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

এরা হলেন সোনালী ব্যাংকের খালিয়াজুরী শাখার জুনিয়র ক্যাশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কারিগরী প্রশিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও ইউনিয়ন মাঠকর্মী মামুন উদ্দিন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সমাজসেবা কার্যালয় ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খালিয়জুরিতে ছয়টি ইউনিয়নে বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী মোট চার হাজার ৭৩৮ জন ভাতা পান। তাদের মধ্যে বয়স্ক ২,৬৯৩ জন, বিধবা ১,৫২৬ জন ও প্রতিবন্ধী ৫১৯ জন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন ইউনিয়নের ওই সুবিধাভোগীদের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের খালিয়াজুরি শাখায় তার নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা দেওয়া শুরু হয়। সেখানে জুনিয়র ক্যাশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কারিগরী প্রশিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও ইউনিয়ন মাঠকর্মী মামুন উদ্দিনের যোগসাজেশে ভাতাভোগীদের টিপসই নিয়ে ১৫০০ টাকা থেকে ১৮০০ করে টাকা কম দেওয়া হয়।

বুধবার পর্যন্ত উপজেলার সদর ও গাজীপুর ইউনিয়নে ৯৩৮ জনের মধ্যে টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

বিষয়টি খালিয়জুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছানোয়ারুজ্জামান জুসেফকে জানানোর পর তিনি ভুক্তভোগীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার ইউএনওর কাছে যান এবং তাকে বিষয়টি জানান।

ইউএনও সরকার আবদুল্লা আল মামুন বলেন, তিনি লোক পাঠিয়ে ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের তার কার্যালয়ে ডেকে আনেন। এ সময় ভুক্তভোগীরা ওই ব্যক্তিদের দেখে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

“এ সময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হয়। তারা প্রথমে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন।”

এ সময় তাদেরকে ওই কার্যালয়ের একটি কক্ষে আবদ্ধ রাখা হয় জানিয়ে ইউএনও বলেন, তার নির্দেশে আত্মসাতের মোট ১৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা ওই তিন ব্যক্তি আলাদা নিজস্ব চেক দিয়ে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে ভোক্তভোগীদের মধ্যে ফেরত দিতে বাধ্য হন। বিকালে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “অভিযোগের কথা আমি শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক খালিয়াজুরী শাখার ব্যবস্থাপক সুস্থির সরকার বলেন, “অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

খালিয়াজুরী থানার ওসি মো. হযরত আলী বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বয়স্ক, প্রতিবন্ধী ও বিধবাদের ভাতার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা ও  সমাজসেবার দুই কর্মচারীকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। তাদেরকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।