ভ্রমণেই হলো মেডিকেল ছাত্র পিয়াসের মৃত্যু

ঘুরে বেড়ানো ভীষণ পছন্দ করতেন মেডিকেল ছাত্র পিয়াস রায়। সেই বেড়ানোর মধ্যেই মৃত্যু হলো তার।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 March 2018, 05:59 AM
Updated : 14 March 2018, 10:04 AM

নেপালের কাঠমান্ডুতে সোমবার বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের এই ছাত্র।

পিয়াস রায় ওই মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।

তার মৃত্যুতে ওই কলেজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সহপাঠীরা শোকাহত। মঙ্গলবার তারা কালোব্যাজ ধারণ করেছেন এবং কলেজে একাডেমিক কার্যক্রম হয়নি। সন্ধ্যায় পিয়াস স্মরণে ক্যাম্পাসে  প্রদীপ প্রজ্জালন করা হয়।

সহপাঠীরা জানিয়েছেন, পিয়াস বন্ধুবৎসল ও প্রিয়ভাষী ছিলেন। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও জড়িত ছিলেন তিনি। ভ্রমণ তার খুবই প্রিয় ছিল বলে তারা জানান।

কলেজের শিক্ষানবিস চিকি’ৎসক পুস্পিতা রায় বলেন, “গত ৫ মার্চ পিয়াসের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে। নেপালে তার বন্ধু রয়েছে শুনেছি। সেখানে বেড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। তার মৃত্যুতে কলেজ স্তব্ধ হয়ে গেছে।”

পিয়াস রায় বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের মধুকাঠি গ্রামের সুখেন্দু বিকাশ রায়ের ছেলে। তারা বরিশাল নগরের নতুনবাজারে মথুরানাথাত পাবলিক স্কুল সংলগ্ন একটি ভবনের ফ্লাটে থাকেন।

সুখেন্দু বিকাশ রায় ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার চন্দ্রকান্দা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মা পূর্ণা রানি মিস্ত্রি বরিশাল সরকারি পলিটেকনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

এ দম্পত্তির এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে পিয়াস রায় বড়। তার বোনের নাম শুভ্রা রায়। 

পিয়াস বরিশাল জিলা স্কুল থেকে এসএসসি ও ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসে ভর্তি হন।

পিয়ারেসর মা  পূর্ণা রানি মিস্ত্রি বলেন, রোববার (১১ মার্চ) রাতে বরিশাল থেকে লঞ্চযোগে ঢাকা রওনা দেয় পিয়াস। পরদিন সকালে ঢাকা পৌঁছে চাচাত ভাইয়ের বাসায় ওঠে। সেখান থেকেই হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরে গিয়ে নেপালগামী বিমানে ওঠে।

তিনি বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সর্বশেষ ছেলের সঙ্গে তার কথা হয়। তখন পিয়াস জানিয়েছিলেন তিনি কিছুক্ষণের মধ্যে প্লেনে উঠবেন। এরপর আর কোনো খবর তার পাওয়া যায়নি।

পিয়াসের ছোট বোন শুভ্রা রায় বলেন, “পিয়াস দেশ বিদেশ ভ্রমণ করতে ভালোবাসত। ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে। নেপালে তার বন্ধু ছিল। তাদের সাথে সময় কাটাতে সে পাঁচ দিনের জন্য নেপাল যাচ্ছিল।”

শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ লিয়াকত হোসেন তপন কলেজ ছাত্র পিয়াসের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।