শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “তাদের যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা আসলে খুবই কম। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া দরকার ছিল এবং রাষ্ট্রীয় আইনে তাদের বিচার করার দরকার ছিল।”
তিনি বলেন, “আমি যে বিশ্ববিদ্যালযে শিক্ষক হিসেবে পড়াই; সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই কাজ করেছে। আমি খুবই লজ্জিত। আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি; কারণ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই কাজ করেছে।”
শাস্তি ‘বেশি হয়ে গেছে’ দাবি করে বহিষ্কৃতদের রক্ষায় তাদের বন্ধুদের আন্দোলনে নামার একদিন পর এ মন্তব্য করলেন জনপ্রিয় এই লেখক।
নবাগত ছয় শিক্ষার্থীকে র্যাগিং ও মারধরের পর নগ্ন ছবি তুলে তা তাদেরকে দিয়ে ফেইসবুকে পোস্ট করার অপরাধে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই ছাত্রকে আজীবন বহিষ্কারসহ পাঁচ ছাত্রকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া আরও ১৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জরিমানা ও সতর্ক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জাফর ইকবাল বলেন, তাদের অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় শাস্তি দেওয়া হয়েছে। শাস্তি গ্রহণ করে ওদের ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটা না করে তারা আন্দোলন করা শুরু করেছে। বিশ্বদ্যিালয়ের বাকি ছাত্রদের কষ্ট দিচ্ছে। শুধু তাই নয়; তারা শিক্ষকদের সাথে বেয়াদবিও করেছে। এটা খুবই লজ্জার।
“বিশ্বদ্যিালয় কর্তৃপক্ষ যেন এই ধরনের কুৎসিত আন্দোলনে মাথা না নোয়ায় এবং শাস্তি বহাল রাখে। তাতেই এ ধরনের অপরাধ কমবে।”
বহিষ্কৃতদের রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আন্দালনে নেমেছিলেন বহিষ্কৃতদের বন্ধুরা। তারা পরিবহন বাস বন্ধ করে রাখায় এদিন বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ ছিল।
ক্লাস-পরীক্ষা আর প্রশাসনিক কার্যক্রমে অংশ নিতে এসে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা আন্দোলনকারীদের হাতে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার শিক্ষক সমিতি ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ।
আন্দোলকারী শিক্ষার্থী ফয়জুর রহমান বলেন, দুই শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করে তাদের জীবনকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় উপাচার্য বরাবর বহিষ্কৃতদের শাস্তি কমানোর জন্য স্মারকলিপি দিয়ে পরবর্তীতে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।
আন্দোলনকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রক্টর জহীর উদ্দিন আহমেদ বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রমাণ হয় সাজাপ্রাপ্তরা ঘটনার সাথে জড়িত ছিল। তদন্ত কমিটি, শৃঙ্খলা কমিটি অতঃপর সিন্ডিকেট সভা থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত এসেছে। এখানে আর কিছু করার নেই।