সাংবাদিক শিমুল হত্যা: ২ আসামির শরীরে এখনও গুলি 

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার দুই আসামির শরীরে এখনও গুলি রয়েছে।  

ইসরাইল হোসেন বাবু সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2018, 01:23 PM
Updated : 27 Feb 2018, 02:28 PM

আদালতের নির্দেশে গঠিত মেডিকেল বোর্ড ওই দুজনের শরীরে গুলি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতিবেদন দিয়েছে।  

সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জনের মাধ্যমে ওই মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন মঙ্গলবার শাহজাদপুর আমলী আদালতে দাখিল করা হয়েছে।

বিচারক মো. হাসিবুল হক প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে আগামী ২ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

এ দুজন হলেন শাহজাদপুরের মনিরামপুর এলাকার আজাহার আলীর ছেলে সাহেব আলী (৩০) এবং একই এলাকার তোরাজ আলীর ছেলে মো. জহির আলী (৩২)। তারা বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় মেয়রের স্ত্রী লুৎফুন নেছা পিয়ারীর করা মামলায় এ দুজনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

এই মামলার আইনজীবী রফিক সরকার বলেন, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে শাহজাদপুর উপজেলা আমলী আদালতের বিচারক মেডিকেল বোর্ড গঠন করে শাহেব আলী ও জহির আলীর শরীরের গুলি আছে কি না তা পরীক্ষা করানোরে আদেশ দেন সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জনকে।

তিনি বলেন, এরপর সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক (সার্জন) আব্দুর রব্বান তালুকদারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।

“এই বোর্ডের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে এ দুজনের শরীরে গুলি রয়েছে বলে প্রতিবেদন দেন।

“প্রতিবেদনে বলা হয়- সাহেব আলীর দুই উরু ও দুই পায়ের পিছন দিকে অনেকগুলো ছররা গুলি এবং জহির আলীর বাম পায়ের পাতার নিচে একটি ছররা গুলি রয়েছে।”

বাদীর আইনজীবী আরও বলেন, আগামী ২ এপ্রিল শুনানির দিন আদালতের অনুমোদনক্রমে আহতদের অপারেশন করে শরীর থেকে গুলি বের করার পর ওই গুলির ফরেনসিক পরীক্ষা করানোর জন্য আবেদন করা হবে।

গুলিবিদ্ধ সাহেব আলী বলেন, “নিহত সাংবাদিক শিমুলের মাথা থেকে যে গুলি বের করা হয়েছে এবং আমাদের শরীরে যে গুলি আছে তা বের করে পরীক্ষা করলেই শিমুল কার গুলিতে মারা গেছেন তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।”

মেয়রের ছোট ভাই হাফিজুর রহমান পিন্টু বলেন, “সংঘর্ষের সময় সাংবাদিক শিমুল গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি আমাদের পক্ষেরও চার জন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিল।”

এদের মধ্যে হুমায়ন ও কালুর শরীর থেকে ইতিমধ্যেই গুলি বের করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুরের সাময়িক বরখাস্ত পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুর বাড়িতে হামলা, আওয়ামলী লীগের দুগ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সমকাল পত্রিকার শাহজাদপুর প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন বাদী হয়ে মেয়র হালিমুল হক মিরুসহ অন্য আসামিদের নাম দিয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পাশাপাশি ছাত্রলীগ নেতা বিজয় মাহমুদকে মারপিটের ঘটনায় তার চাচা এরশাদ আলী বাদী হয়ে একই ব্যক্তিদের আসামি করে আরেকটি মামলা করেন।

একই সময় মেয়রের বাড়িতে হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে মেয়রের স্ত্রী লুৎফুন নেছা পিয়ারী ১৭ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন।

পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর বাদী আদালতে নারাজি দিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের আবেদন করেন। আবেদনটি আমলে নিয়ে বিচারিক সাক্ষ্য গ্রহণের পর ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।

শাহজাদপুর পৌরসভার সাময়িক বরখাস্ত মেয়র মিরু এখনও জেলহাজতে রয়েছেন।