কোটালীপাড়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলক নির্মিত

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2018, 12:37 PM
Updated : 16 Feb 2018, 04:01 PM

উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম জহরেরকান্দিতে এ স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে।

আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি এ স্মৃতিফলক উদ্বোধন করা হবে বলে জানান গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য দেবদুলাল বসু পল্টু।

দেবদুলাল বসু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দীর্ঘ ৪৭ বছরেও কোটালীপাড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথা নিয়ে কোনো স্মৃতি চিহ্ন রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে এসব স্মৃতিচিহ্ন বিলুপ্ত হতে চলেছিল।

“বিলুপ্তপ্রায় স্মৃতি চিহ্নগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে জহরেরকান্দিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলক নির্মাণ করেছি। ভবিষ্যতে রামশীল ইউনিয়নের সব যুদ্ধক্ষেত্র গণকবর, প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করব।”

তিনি জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে জহরেরকান্দি গ্রামের পূর্ব কোটালীপাড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে হেমায়েত বাহিনীর প্রধান বীর বিক্রম হেমায়েত উদ্দিন মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং ক্যাম্প স্থাপন করেন।

দেবদুলাল বলেন, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, বরিশাল, মাদারীপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলার মুক্তিযোদ্ধারা এ ক্যাম্প থেকে ট্রেনিং নেন। হেমায়েত উদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল ইউনিয়নের রাজাপুর, রামশীল ও জহরেরকান্দিসহ বরিশাল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলেন।

“এসব স্থানে একাধিকবার পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা হেমায়েত বাহিনীর সম্মুখযুদ্ধ হয়। এসব যুদ্ধে হেমায়েত বাহিনীর বহু মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। হেমায়েত উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।”

হেমায়েত বাহিনীর এ বীরত্বগাথা তুলে ধরতে কোটালীপাড়ার রামশীল ইউনিয়নে কোনো স্মৃতি চিহ্ন সংরক্ষণ করা হয়নি। ভবিষ্যতে এর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

হেমায়েত বাহিনীর সদস্য যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। এ ইতিহাস ধরে রাখতে ও নতুন প্রজন্মকে জানান দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।

“এ প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে দেবদুলাল বসু স্মৃতি ফলক নির্মাণ করেছেন। এজন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই।” 

জেলা পরিষদ সদস্য ও মুক্তযোদ্ধার সন্তান নজরুল ইসলাম মন্নু বলেন, “পূর্ব কোটালীপাড়ায় মুক্তিযুদ্ধে অনেক স্মৃতিচিহ্ন অবহেলিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আমি এগুলো সংরক্ষণ করে মৃক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়তে আহ্বান জানাচ্ছি।”

জহরেরকান্দি পূর্ব কোটালীড়াপাড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ ঢালী বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা দেশ পেয়েছি। তাই আমাদের এ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরতে এ ধরনের কাজ করে যেতে হবে।”