ছাত্রলীগ নেতা সুপায়ন চাকমার উপর হামলার প্রতিবাদ ও তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবিতে দঙ্গলবার রাঙামাটিতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করে ছাত্রলীগ।
বিকালে শহরের কয়েকটি স্থানে কর্তব্যরত দুই সাংবাদিক, এক পুলিশ সদস্য ও দুই পথচারী মারধরের শিকার হন।
তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বনরূপায় ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
আহত দুই সাংবাদিককে দ্রুত রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সাংবাদিক সাইফুল বিন হাসান বলেন, “আমি মিছিলের ছবি তুলছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা ডিবি পুলিশের এক সদস্য ও পাহাড়ি যুবককে বিনা কারণে মারধর শুরু করলে আমি ছবি তোলার সময়ই আমাকে মারধর শুরু করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হামলাকারীদের কয়েকজনকে আমি চিনতে পেরেছি।”
আহত সংবাদকর্মীদের রাঙামাটি সদর হাসপাতালে আনা হলে সেখানে তাদের দেখতে যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান। ছুটে যান সংবাদকর্মীরাও।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিছুক্ষণ পরেই জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা, সহসভাপতি সাইফুল আলম রাশেদসহ ছাত্রলীগের একটি প্রতিনিধিদল হাসপাতালে আসেন এবং হামলার ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে জড়িতদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার ঘোষণা দেন।
বিকালে হরতাল শেষে বনরূপা চত্বরে ছাত্রলীগের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. শাওয়াল উদ্দিন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ কাজল, শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশে সুপায়ন চাকমাসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবির পাশাপাশি রাঙামাটির পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম এবং কোতোয়ালি থানার ওসি সত্যজিৎ বড়ুয়াকে প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় রাঙামাটি স্টেডিয়ামে খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পথে জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সুপায়ন চাকমাকে একদল যুবক মারধর করে। এর প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক রাঙামাটি শহরে অবরোধ সৃষ্টি করে পুরো শহর অচল করে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। এ সময় রাস্তায় টায়ারও জ্বালান তারা। পরে পুলিশ এসে টিয়ারশ্যাল ও ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ওই হামলার প্রতিবাদে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন মঙ্গলবার রাঙামাটিতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ঘোষণা করেন।