মাগুরার দুই বিএনপি নেতা দুষছেন ‘ইকোনো কামাল’কে

দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজার জন্য দলটির এক সময়ের সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামালকেই দায়ী করেছেন মাগুরার বিএনপির দুই নেতা।

মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Feb 2018, 03:28 PM
Updated : 8 Feb 2018, 04:19 PM

তারা বলছেন, কামালের মতো ‘স্বার্থান্বেষীদের’ জন্য খালেদা জিয়া ও বিএনপি বারবার বিপদে পড়ছে।

বৃহস্পতিবার জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় একথা বলেন মাগুরার বিএনপি নেতারা। এই রায়ে সালিমুল হকেরও ১০ বছর কারাদণ্ড হয়েছে।

জিকিউ বলপেন (ইকোনো) কোম্পানির মালিক সালিমুল হককে ১৯৯৪ সালের মাগুরায় উপ-নির্বাচনে বিজয়ী করতে গিয়ে বিপদে পড়তে হয়েছিল বিএনপিকে।

ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলেছিল আওয়ামী লীগ। তার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালে বিএনপিকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল।

দুই যুগ পর আবার খালেদা জিয়ার সাজার সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসে সালিমুল হকের নাম।

মাগুরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ মোকাদ্দেস আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারের নীল নকশা অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। এ মামলার সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

“তবে দলের কামালের মতো স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে বেগম জিয়া ও বিএনপি বার বার বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে।”

আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব কিশোর পুরনো ঘটনা তুলে বলেন, “সে সময়ের নির্বাচনকে ইস্যু করে আওয়ামী লীগ আন্দোলনে নেমে বিএনপিকে বিপাকে ফেলেছিল।”

তারা দুজনেরই অভিযোগ, ২০০১ সালে সালিমুল হক কামাল আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও নিজের আখের গোছানো নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। বিএনপির দুঃসময়ে তিনি কখনও সক্রিয় ছিলেন না।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি টাকা ট্রাস্টে নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।

সালিমুল হক কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওই ট্রাস্টের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকার পরও তিনি তারেক রহমানের কাছ থেকে পাঁচটি চেক নিয়ে এফডিআর করেন এবং পরে তা ভাঙান। সে সময় প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি শাখা ব্যবস্থাপকদের দিয়ে সৈয়দ আহমেদ ও গিয়াস উদ্দিন আহমেদ নামের দুই ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে এফডিআর ভাঙিয়ে সেই টাকা শরফুদ্দিন আহমেদের অ্যাকাউন্টে জমার ব্যবস্থা করেন।

কারাবন্দি সালিমুল হকের উপস্থিতিতে দেওয়া রায়ে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন বিচারক।

১৯৯৪ সালের বিতর্কিত ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুজ্জামান বাচ্চু রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “কাজী কামাল ও তারেক রহমানের মত দুর্বৃত্তদের কারণে খালেদা জিয়া বিপদে পড়েছেন।”

তিনি বলেন, “বিএনপি যে নজিরবিহীন ভোট ডাকাতি করেছিল আজকের এই সাজার মধ্যে দিয়ে খালেদা ও কাজী কামাল তার প্রায়শ্চিত্ত করছেন মাত্র।”