ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতালে বিনামূল্যে আধুনিক চিকিৎসা

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে গোপালগঞ্জের ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান’।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2018, 06:44 AM
Updated : 3 Feb 2018, 06:45 AM

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে গোপালগঞ্জে আন্তর্জাতিক মানের এই চক্ষু হাসপাতাল চিকিৎসা সেবা শুরু করে।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মাদারীপুর, পিরোজপুর, বাগেরহাট, নড়াইল, বরিশাল খুলনা, ফরিদপুর, সাতক্ষীরা, রাজবাড়ী, শারীয়তপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোর, ঝালকাঠি, বরগুন, পটুয়াখালী, ভোলা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা জেলার রোগীরা এ হাসপাতাল থেকে সেবা পাচ্ছেন।

কর্তৃপক্ষ জানায়, সাইট সেভার্স, অরবিচ, ভারতের অরবিন্দ আই কেয়ার ইনস্টিটিউট, পিকেএসএফ ও রিকের সহযোগিতায় এখানে ধনী-গরিব নির্বিশেষে বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ওষুধ, পরামর্শ, অপারেশন ও লেন্স সংযোজন করাসহ সব ধরনের সেবা প্রদাণ করা হচ্ছে।  

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালক চক্ষু বিশেষজ্ঞ দ্বীন মোহাম্মদ ও চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদের নিবিড় মনিটরিং রয়েছে এ হাসপাতালে।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. অমৃত লাল বিশ্বাস জানান, গত বছর এ হাসপাতালে সাড়ে ছয় হাজার মানুষের ছানিজনিত অন্ধত্ব দূর হয়েছে। এছাড়া এক লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৯ জন রোগীকে নানা ধরনের চক্ষু সেবা দেওয়া হয়েছে।

সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের পাশাপাশি এখানে ডায়াবেটিক রোগীদের বিশেষ চক্ষু সেবা প্রদান করা হচ্ছে বলেও অমৃত লাল জানান।

এছাড়া রয়েছে ব্রেস্ট ফিডিং, ডে কেয়ার কর্নার, চিলড্রেন প্লেয়িং জোন, মেডিটেশন রুম, নামাজ ও প্রার্থনা কক্ষ।

এখানে রেটিনা, গ্লুকোমা, কর্ণিয়া, শিশু চক্ষু রোগ, ছানি অপারেশন, চোখের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষাসহ  চোখের প্রায় সব ধরনের চিকিৎসা করা হয় বলে অমৃত জানান।

হাসপাতালে রোগী দেখছেন অধ্যাপক ড. দ্বীন মোহাম্মদ

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালক চক্ষু বিশেষজ্ঞ দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি এ হাসপাতালে নিয়মিত আসছি। হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাথে মতবিনিময় করে চক্ষু চিকিৎসার ব্যাপারে পরামর্শ দিচ্ছি।

“এছাড়া আমি নিজে এখানে রোগীর চক্ষু অপারেশন করছি। এতে চিকিৎসকরা উৎসাহিত হচ্ছেন। হাসপাতালের চক্ষু চিকিৎসার মান বৃদ্ধি পাচ্ছে।”  

গোপালগঞ্জ শহরের ব্যাংকপাড়ার চান মিয়া, নড়াইলের পাখিমারা গ্রামের কমল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ সদরের পাইককান্দি গ্রামের জবেদা বেগম বলেন, এখানে এসে তারা সুচিকিৎসা পেয়েছেন। বিনামূল্যে অপারেশন, লেন্স, ওষুধ দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

তারা প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য, সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা বাগেহাটের সাউথখালী গ্রামের গৃহবধূ শিউলী খানম বলেন, “এখানে শিশু ও মহিলাবান্ধব পরিবেশ রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসার মান ভালো। চিকিৎসকরা আন্তরিকতার সাথে চিকিৎসা করেন। এখানে এসে আমি সুচিকিৎসা পেয়েছি।”

গোপালগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দ্বীন মোহাম্মদ প্রায় প্রতিমাসে এ হাসপাতালে এসে চিকিৎসকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এর পাশাপাশি রোগীদের চোখের চিকিৎসা ও অপারেশন করেন।

তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার রোগীরা এসে চক্ষু রোগের সব ধরনের সেবা গ্রহণ করেন। তাদের চোখের ছানি ও নেত্রনালী বিনামূল্যে অপারেশন করা হয়। এছাড়া গোপালগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাসাপাতালের উদ্যোগে ক্যাম্প করে রোগী বাছাই করা হয়। তাদের এ হাসাপাতালে বিনামূল্যে চক্ষু রোগের চিকিৎসা  ও অপারেশন করা হয়। এতে এ অঞ্চলের ছানি জনিত অন্ধত্ব অনেকটা কমে এসেছে।