জয়পুরহাটে বাড়ছে ফসলি জমিতে পুকুর খনন

তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে মাছ চাষে ঝুঁকছেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার ভূমি মালিকরা। ফসলের চেয়ে মাছে অধিক লাভে তারা এ কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন।

মোমেন মুনি জয়পুরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2018, 06:23 AM
Updated : 3 Feb 2018, 07:38 AM

সরেজমিন জানা গেছে, উপজেলার পুনট, মাত্রাই, জিন্দারপুর, আহম্মেদাবাদ ও উদয়পুর ইউনিয়নে ২০১৫ থেকে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই তিন ফসলি জমিতে নতুন-পুরাতন পুকুর খনন হয়েছে ৪০টি। নতুন করে খনন কাজ চলছে আরও ২৮টির। প্রায় ১৫০ বিঘার এসব জমিতে ধান, আলু, সরিষা, গমসহ অন্যান্য ফসল চাষ করা হতো।

মাত্রাইয়ের আব্দুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার এক একর পুকুর ছিল। আরও দুই একর জমির মাটি কেটে তা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।

“আলু ও সরিষা চাষে করে যে টাকা আসত তাতে লাভের মুখ দেখতাম না। এরপর থেকে মাছ চাষ শুরু করেছি। এখন ভালই লাভ হচ্ছে। তাই পুকুরও বড় করছি।”

ফসলি জমিতে পুকুর করতে প্রশাসনের অনুমতি লাগে কিনা তা জানা নেই, এবং কোনো অনুমতি নেননি বলেও জানান রাজ্জাক।

কয়েক মাস আগে এক একর ৫২ শতক ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর খনন করছেন ইমামপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “এর আগে ও বর্তমানে বিভিন্ন জন প্রায় দেড় শতাধিক বিঘা তিন ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন করেছেন। তাদের বেলায় তো প্রশাসনের অনুমতি লাগেনি, তাহলে আমি কী দোষ করেছি?”

একই কারণে পুকুর করে মাছ শুরু করেছেন মাত্রাইয়ের বেলাল, জিন্দারপুরের হাসন, গণি মিয়া, রিতা রাণী, উদয়পুরের শফি ও রমেন। আর পুনটের বামন তার ১০ বিঘা জমিতে পুকুর খনন শুরু করেছেন।

এদের মধ্যে মাত্রাইয়ের বেলালের তিনটি পুকুর ২২ বিঘা জমিতে এবং অন্যদের পুকুরগুলো ৩ থেকে ৮ বিঘা জমিতে।

মাত্রাইয়ের চেয়ারম্যান আ ন ম শওকত হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লাভজনক হওয়ায় এলাকাবাসী ফসল চাষ বাদ দিয়ে নিজেদের জমিতে পুকুর করে মাছ চাষ করেছেন।

“তিন ফসলি জমিতে পুকুর করতে প্রশাসনের অনুমতির বিষয়টি আমার জানা নেই।”

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, নতুন করে পুকর খনন করায় দিন দিন কমে যাচ্ছে আবাদি জমি। এই তৎপরতা বন্ধ করা না গেলে কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আফাজ উদ্দীন বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর তৈরির জন্য সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির আবেদন পাওয়া গেলেও অনুমতি দেওয়া হয়নি। এছাড়া আর যারা এ কাজ করে যাচ্ছেন, তদন্ত ও পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।