লুসি হল্ট পেলেন মাল্টিপল ভিসা, ফি মওকুফ 

এদেশকে ভালোবেসে যুগের পর যুগ মানুষের সেবায় নিয়োজিত ব্রিটিশ নাগরিক লুসি ফ্রান্সিস হল্টকে ১৫ বছরের মাল্টিপল ভিসা দেওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য তার ভিসা ফি মওকুফও করা হয়।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2018, 01:59 PM
Updated : 2 Feb 2018, 01:59 PM

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মনিরা হক স্বাক্ষরিত এক চিঠির বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান।

বাংলাদেশের নাগিরিকত্ব এবং ভিসা ফি মওকুফে লুসি হল্টের আবেদনের বিষয়ে একটি সংবাদ এক মাস আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত হয়।

জেলা প্রশাসক বলেন, লুসি হল্ট ভিসা নবায়ন ফি মওকুফসহ দ্বৈত নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন।

“প্রাথমিকভাবে তার ভিসা ফি মওকুফ করে তাকে ১৫ বছরের মাল্টিপল ভিসা দেওয়া হয়েছে।”

তার দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি খুব শিগগিরই সুরহ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন জেলা প্রসাশক।

৫৭ বছর আগে ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট বাংলাদেশে আসেন। সেবার হাত বাড়িয়ে দেন মানুষের প্রতি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যশোরের একটি হাসপাতালে যুদ্ধাহতদের সেবা করেছেন। দেশ স্বাধীনের পরও বাংলাদেশ ছেড়ে যাননি।

মৃত্যুর পর বরিশালের মাটিতে সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা তার।

লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টের অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমার ভিসা ফি মওকুফ করায় আমি সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। প্রতিবছর এই ভিসা নবায়নের জন্য অনেক টাকা খরচ হতো, যেটা যোগান দেওয়া আমার পক্ষে আর সম্ভব হয়ে উঠছিল না। এখন দ্বৈত নাগরিকত্ব পেলে এই দেশে থাকতে আমার আর কোনো সমস্যা হবে না।”

প্রতিবছর ৩৪ হাজার টাকা ভিসা নবায়ন ফি দিতে হতো তাকে। ভিসা ফি মওকুফ হওয়ায় এখন আর তা দিতে হবে না।

মানুষের সেবা করার জন্য ১৯৬০ সালে বরিশালের অক্সফোর্ড মিশনে যোগ দেন তিনি। এটাই তার প্রথম বাংলাদেশে আসা। অক্সফোর্ড মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়াতেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় যশোর ক্যাথলিক চার্চে শিশুদের ইংরেজি পড়াতেন তিনি। যুদ্ধের কারণে চার্চ বন্ধ করে সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেলেও যাননি লুসি হল্ট। যুদ্ধাহত মানুষদের সেবা দিয়েছেন তিনি।

২০০৪ সালে অবসরে যাওয়ার আগে খুলনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও ঢাকায় কাজ করেছেন লুসি হল্ট। অবসর জীবনে তিনি বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনের শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দিচ্ছেন।