সোমবার বিকালে নগরীর চাষাঢ়ায় পৌর মার্কেটের সামনে হকার্স সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রতি।
গত ২৫ ডিসেম্বর নগরীর ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ করে জেলা পুলিশ ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। এরপর থেকে পুর্নবাসনের আগ পর্যন্ত ফুটপাতে বসতে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছে হকাররা। সাংসদ সেলিম ওসমান হকারদের পুর্নবাসনের আগ পর্যন্ত বিকল্প প্রস্তাব দেন সিটি করপোরেশনকে।
এরপর মানবিক দিক বিবেচনা করে রোববার সিটি করপোরেশন আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নগরীর কয়েকটি স্থানে প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত হকাররা বসতে পারবে বলে জানায়।
শামীম ওসমান বলেন, “আমি কাউকে অনুরোধ করতে আসি নাই। আমি সেলিম ওসমান সাহেব না। আমি আমার ভাইয়ের মতো ভদ্র মানুষ না।
“আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই এটা অনুরোধ না, নির্দেশ; নারায়ণগঞ্জে ফুটপাতে হকার বসবে। আলোচনা করে হকারদের সমস্যার সমাধান না হলে মঙ্গলবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হকার বসবে।”
তিনি বলেন, “যারা আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাদের জবাব দিতে দুই মিনিটও লাগবে না শামীম ওসমানের।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের রুটি রুজি কেনার জন্য ক্ষমতায় আসে নাই। আগে হকারদের পুর্নবাসন করুন, তারপর তাদেরকে উচ্ছেদ করেন।”
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, “নারায়ণগঞ্জের মানুষ কি ওসমান পরিবারের কাছে নতজানু হয়ে থাকবে? তাহলে এই শহরের নাম পরিবর্তন করে ওসমান নগরী করা হোক।
“প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একনেকের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে হকারদের ফুটপাত থেকে উঠিয়ে পুর্নবাসনের জন্য। জনগণের চলাচল নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে এই কাজটি করা হয়েছে।”
সিটি করপোরেশন এলাকায় হর্কাস মার্কেট নির্মাণ ও হলি ডে মার্কেট করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ, তার সংসদীয় আসনের এলাকা থেকে কোনো হকারকে উচ্ছেদ করা হয়নি। তিনি অযাচিতভাবে হকারদের বসানোর ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন, যেটি তিনি করতে পারেন না।
“তিনি যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগকে নির্দেশ দিয়েছেন অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে হকার বসাতে, তাদের কাজ হকার বসানো নয়। তাদের কাজ প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কাজ জনগণের সামনে তুলে ধরা।”
হকার বসানোর ঘোষণার বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, “পরিস্থিতি আমাদের নজরদারির মধ্যে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না হয় সে বিষয়ে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।”
জেলা হকার্স লীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, মহানগর হকার্স লীগের সভাপতি আব্দুর রহিম মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক পলাশ আহম্মেদ, রুবী আক্তার, ইয়াসিন বেগম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম শাহ্ নিজাম প্রমুখ।