গোপালগঞ্জে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে ত্রুটিপূর্ণ বই

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রাথমিকের দুই হাজার শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া বইয়ে কয়েকটি পৃষ্ঠা না থাকাসহ বিভিন্ন ধরনের ত্রুটি দেখা গেছে।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2018, 07:30 AM
Updated : 15 Jan 2018, 11:19 AM

ত্রুটির বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, নতুন বই এলে ত্রুটিপূর্ণ বইগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফেরত নেওয়া হবে।  

এসব বইয়ের কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।

গত ১ জানুয়ারি বছরের প্রথম দিন দেশের সব স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির চার কোটি ৩৭ লাখ ছয় হাজার ৮৯৫ জন শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে তুলে দেওয়া হয় নতুন পাঠ্যপুস্তক।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, “প্রথম শ্রেণির পাঁচশ বাংলা বইয়ের মধ্যে চতুর্থ শ্রেণির বাংলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ইংরেজি দুইশ বইয়ের মধ্যে এক থেকে ১২ পৃষ্ঠা, তিনশ গণিত বইয়ে প্রথম দুই পৃষ্ঠা, দ্বিতীয় শ্রেণির দুইশ গণিত বইতে জ্যামিতির অধ্যায় নেই।

“তৃতীয় শ্রেণির দুইশ বাংলা বইয়ে এক থেকে ৭ পৃষ্ঠা, চতুর্থ শ্রেণির দুইশ বাংলা বইয়ে এক থেকে ১০ পৃষ্ঠা, পঞ্চম শ্রেণির একশ ইংরেজি বইতে ৪৪ থেকে ৭৮ পৃষ্ঠা নেই। আর পঞ্চম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইয়ে ৩০ থেকে ৪০ পৃষ্ঠা এবং একই বিষয়ের একশ বইতে ৯১ থেকে ৯৮ পৃষ্ঠা নেই।”

কোটালীপাড়ার বাগান উত্তরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী পিউ সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে, “আমার বাংলা বইয়ে কভার উল্টো। আমার বন্ধুদের বাংলা বইয়ের একই অবস্থা।”

সরেজমিনে জানা যায়, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র তন্ময় বাগচীর বাংলা বইয়ের প্রথম সাত পৃষ্ঠা নেই। সুজিতের বাংলা বইয়ের ৮৬ থেকে ১০৩ পৃষ্ঠা নেই।  চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ফারুকের বাংলা বইয়ের প্রথম ছয় পৃষ্ঠা নেই।

দীনেশ সাহা নামে এক অভিভাবক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ত্রুটিপূর্ণ বই পেয়ে আমার মেয়ের পড়াশেনা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে মন খারাপ করেছে সে।”

শিগগিরই ত্রুটিমুক্ত নতুন বই সরবরাহ করার দাবি জানান তিনি।

শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আগে কোনো ধরনের ত্রুটি আছে কি না তা  যাচাই-বাচাইয়ের পরার্মশ দেন রাসেল নামে আরেক অভিভাবক।

বাগান উত্তরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাঞ্চন রত্না বলেন, “ত্রুটিপূর্ণ বই হাতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা আমাদের জানায়। এ বইয়ের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি আমি প্রধান শিক্ষককে জানিয়েছি।”

প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ কান্ত সরকার বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ত্রুটিপূর্ণ বইয়ের তালিকা দেওয়া হয়েছে। ত্রুটিমুক্ত নতুন বই সরবরাহ করা হবে বলে শিক্ষা অফিস জানিয়েছে।

শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল বলেন, রোববার পর্যন্ত প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির দুই হাজার ত্রুটিপূর্ণ বইয়ের তালিকা হাতে এসেছে। আরও বইতে ত্রুটি রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

“বিষয়টি আমরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। সরবরাহকারীরা ত্রুটিপূর্ণ এসব বই ফিরিয়ে নেবে।”