নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া গ্রামের ২৫ একর জমি এ সেচের আওতায় এসেছে। আগে শুষ্ক মৌসুমে এসব জমিতে চাষ হতো না। এখন নানা ধরনের রবিশস্য চাষ করে কৃষকরা ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন শেরপুর জোন অফিসের সহকারী প্রকৌশলী শাহ্ কিবরিয়া মাহবুব তন্ময় জানান, রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়া ইউনিয়নে রামচন্দ্রকুড়া গ্রাম ভারত সীমান্তবর্তী একটি এলাকা। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে এখানকার জমিতে কোনো ফসল হতো না।
“এ সমস্যা সমাধানে মাননীয় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর পরিকল্পনায় এই পাতকুয়া (ডাগওয়েল) বসানো হয়।”
তিনি জানান, এখানকার পাতকুয়াটি ১১৮ ফুট গভীরতার এবং ৫৬ ইঞ্চি ব্যাসের। এতে সবসময় ২০ ফুট পানি থাকে। এছাড়া এখানে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা আছে।
“সৌরচালিত পাম্পের সাহায্যে আটটি আউটলেটে (ছোট ছোট ট্যাঙ্কি) পানি জমা হয়। সেখান থেকে নলের (ফিতা পাইপ) মাধ্যমে জমিতে সরবরাহ করা হয়।”
গত ১৭ আগাস্ট থেকে চালু হওয়া এই পাতকুয়া দিয়ে এখনও কাজ চলছে। ২৫ একরের মতো জমি সেচের আওতায় এসেছে বলে জানান তিনি।
নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শরিফ ইকবাল বলেন, দশ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি পাতকুয়া নির্মাণ করা হয়েছে এখানে। এই পাতকুয়া থেকে শুষ্ক মৌসুমে আলু, লাউ, পটল, গম, মরিচ, রসুন, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, শসা, করলা, ভুট্টা, বেগুন, ছোলা ও মসুর ডালসহ নানা ফসল আবাদ করেছেন কৃষকরা।
কৃষক আমজাদ আলী বলেন, “এই পাতকুয়ার আওতায় আমি চৌদ্দ কাডা মাডিতে গম বুনছি। আগে এই জমিতে কিছু অইত না। আগে পানি আছিল না; অহন পানি অইছে। গম, আলু, লাউ এই সমস্ত আবাদ করতাছি।
“কোনো খরচও নাই, সরকারিভাবে পানি পাইতাছি। এই পানি দিয়া আমরা বেশ উপকৃত হইতাছি।”
সিরাজুল নামে এক ভুট্টা চাষি বলেন, “এই পাতকুয়া অয়াতে ভুট্টা চাষের উদ্যোগ নিছি আমরা। ভুট্টা আমাদের খুব সুন্দর অইতাছে।”
পাতকুয়া তৈরি করে দেওয়ার জন্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সরকার ও স্থানীয় কৃষি বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কৃষক সিরাজুল, ঝন্টু মিয়া, হাসেন আলী, পলি রানিসহ অনেকে।
সিরাজুল বলেন, “মতিয়া আপা ডাগওয়েল দেওয়াতে আমরা সেচের ব্যবস্থা পাইয়া গেছি। সৌর বিদ্যুতের সেচের পানিতে সব ধরনের ফসল কইরা আমরা লাভবান।”