বিএনপির বিক্ষোভে পুলিশের লাঠিপেটা 

দশম সংসদ নির্বাচনের চতুর্থ বছরপূর্তির দিন দেশের বিভ্ন্নি স্থানে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে গেছে।   

নিউজ ডেস্ক-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2018, 10:36 AM
Updated : 5 Jan 2018, 11:42 AM

চার বছর আগের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যার কালো দিবস’ আখ্যায়িত করে বিভোক্ষ মিছিল, কালো পতাকা ধারণসহ বিভ্ন্নি কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।

দিনটি উপলক্ষে খুলনা, রাজশাহী ও জয়পুরহাটে বিএনপির নেতা-কর্মীরা কালো পতাকা  ও বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টার করলে পুলিশের বাধার মুখে তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পরে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধির পাঠানো সংবাদ-

খুলনা

খুলনার সদর থানা মোড়ে শুক্রবার দুপুরের বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ সময় চারজনকে আটক করা হয় বলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আব্দুল্লাহ আরেফ জানান।

খুলনায় কালো পতাকা মিছিলে পুলিশের বাধা

তিনি বলেন, “বেলা ১১টার দিকে খালিশপুর থানা বিএনপির একটি মিছিল কেডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশ স্থলে যাচ্ছিল। পথে পুলিশ তাদের বাধা দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে।” 

পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করায় পুলিশ লাঠিপেটা ও ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করে বলে আরেফ জানান।

তিনি বলেন, পরে বিএপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে একটি সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে বেলা ১টায় তারা আবার কালোপতাকা নিয়ে মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে তারা পিছু হটে।

পুলিশের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, “শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিনা উস্কানিতে পুলিশ হামলা চালিয়ে নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা ও চারজনকে আটক করে।”

রাজশাহী

রাজশাহীতে বিএপির নেতাকর্মীর কালোপতাকা মিছিল বের করার সময় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নগরীর বোয়ালিয়া থানার মালোপাড়া এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে কালোপতাকা মিছিল বের করে নগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। মিছিলে নেতৃত্ব দেন নগর বিএনপির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু।

মিছিলটি মালোপাড়া মোড়ের দিকে ১০ গজ এগুলোর পর পুলিশ বাধা দেয়।এ সময় বিএনপির নেতাদের সঙ্গে পুলিশের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বিএনপির নেতারা পরিস্থিতি শান্ত করে সেখানে বসে পড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।

এতে মিজানুর রহমান মিনু ও মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বক্তব্য রাখেন।

নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার বলেন, কোন উস্কানি ছাড়াই পুলিশ তাদের মিছিলে বাধা দিয়েছে।

~গণতন্ত্র হত্যা দিবসের কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে সরকার আবারও প্রমাণ করেছে গণতন্ত্র হরণ করে তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়।”

কিন্তু গণতন্ত্র না ফেরানো পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীরা  রাজপথ ছাড়বে না, বলেন তিনি।

বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি আমান উল্লাহ বলেন, নাশকতার আশঙ্কায় বিএনপির নেতাকর্মীদের রাস্তায় বের হতে দেওয়া হয়নি। তবে তাদের দলীয় কার্যলয়ের সামনে সমাবেশ করা অনুমতি দেওয়া হয়।

এদিকে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাগক গোলাম মোস্তফা মামুন জানান, ৫ জানুয়ারি উপলক্ষে বিক্ষোভ সমাবেশ করে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নগরের নিউ মার্কেটের প্রধান গেইটের সামনে থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে। মিছিলটি রাণীবাজার হয়ে অলোকার মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মতিউর রহমান মন্টু মিছিলে নেতৃত্ব দেন বলে জানান তিনি।

জয়পুরহাট

জয়পুরহাট জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে শক্রবার সকাল ১০টার দিকে জেলা বিএনপির উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়।

পরে মিছিলটি ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে কার্যালয়ের সামনে চলে যায়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।  

সমাবেশে জেলা বিএনপির সভাপতি মোজাহার আলী প্রধান বলেন, এ সরকার পুলিশ দিয়ে দেশ চালাচ্ছে; তারা বিএপির নেতা-কর্মীদের দমন পীড়ন করছে।    

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাফিজুর রহমান পলাশ, বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ শামছুল হক এবং  যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি বিনা ভোটে সরকার গঠনের মাধ্যমে আওয়ামীলী গণতন্ত্র হত্য করে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী কায়দায় শাসন ক্ষমতায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তারা। 

জয়পুর সদর থানার ওসি সেলিম হোসেন বলেন, রাজপথে নাশকতা ঠেকাতে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে।