রংপুরে হিন্দু বাড়িতে আগুন: প্রকৌশলী ফজলার রিমান্ডে

ফেইসবুকে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে রংপুরের ঠাকুরপাড়ায় হিন্দু বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ মামলার আসামি জেলা পরিষদের এক প্রকৌশলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2017, 12:10 PM
Updated : 27 Dec 2017, 12:10 PM

বুধবার রংপুরের বিচারিক হাকিম কামরুল হাসান এ আদেশ দেন।

এ ঘটনায় করা পৃথক দুই মামলার এই আসামি ফজলার রহমান রংপুর জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী।

কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফেরদৌস আহমেদ জানান, ফজলারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার কামরুল হাসানের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের হেফাজতের (রিমান্ড) আবেদন করা হয়। বুধবার ওই আবেদনের শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

গঙ্গচড়া থানায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা মিস্টার আলী জানান, গঙ্গচড়া থানার মামলায় রোববার বিচারিক হাকিম আরিফুল ইসলামের আদালতে ১০ দিনে রিমান্ড আবেদন করেন তিনি।  

“বুধবার বিচারিক হাকিম আরিফুল ইসলামের আদালতে ফজলারকে হাজির করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।”

ঠাকুরপাড়ার পাশের গ্রাম মমিনপুরে ফজলার রহমানের বাড়ি। হামলায় পাঁচ ইন্ধনদাতার একজন বলে এসআই মিস্টারের ভাষ্য।  

গত ১০ নভেম্বর ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ মানুষ ঠাকুরপাড়ায় হামলা চালিয়ে নয়টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বাড়ির মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক হামলাকারী নিহত এবং সাত পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি এবং গঙ্গাচড়া থানায় আরেকটি মামলা করে পুলিশ। দুটি মামলায় ১৫৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও দুই হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়।

ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন প্রকৌশলী ফজলার। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্যামলী থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফজলারের বিরুদ্ধে হামলার ঘটনায় জনবল ও অর্থ জোগান দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে তদন্তে তা প্রমাণিত হয়।”

তিনি বলেন, এ ঘটনায় আরও চারজন ইন্ধনদাতা শনাক্ত করা হয়। তারা হলেন- জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সভাপতি মাওলানা ইনামুল হক মাজেদি, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য মাসুদ রানা, সদরের খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও শলেয়াশাহ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সিরাজুল ইসলাম এবং খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য মাওলানা মোস্তাইন বিল্লাহ।

এদের মধ্যে ঘটনার পরদিন জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কয়েকটি বিশেষ টিম কাজ করছে বলে এসপি মিজানুর জানান।