শার্শায় আগাম কুল চাষে ভাগ্য বদল

যশোরের শার্শা উপজেলার পাঁচ শতাধিক চাষি আগাম জাতের কুল চাষ করে ভাগ্য ফিরিয়েছেন বলে কৃষি কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2017, 09:01 AM
Updated : 26 Dec 2017, 06:27 AM

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার বলেন, তার উপজেলায় এ বছর পাঁচ শতাধিক চাষি অন্তত এক হাজার বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছেন।

“তারা বাউকুলের কলম থেকে চারা করে আগাম জাতের এই কুল বাজারজাত করতে পেরেছেন। এ সময় বাজারে কুল না থাকায় তারা বেশি দাম পাচ্ছেন।”

সামটা গ্রামের ৫০ বছর বয়সী কুল চাষি খোরশেদ আলম বলেন, কুল চাষ করেই তিনি তার জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটিয়েছেন, যা অন্যদের অনুপ্রাণিত করে।

“অল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করে আমি অনেক কিছু করেছি। আগে ছিল একটি বাগান। এখন আছে ১০ বিঘা জমিতে তিনটি বাগান।”

গত ১২ বছর ধরে তিনি সফলভাবে কুল চাষ করছেন জানিয়ে বলেন, ভালো ফলনের জন্য নিয়মিত সেচ ও সার দিতে হয়।

“বাগান নিয়মিত পরিচর্যার জন্য ছয়-সাতজন লোকের সঙ্গে আমিও ব্যাপক শ্রম দিয়ে থাকি।”

বিঘাপ্রতি সব মিলিয়ে ৩০-৩২ হাজার টাকা খরচ পড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, “আর ফলন পাওয়া যায় ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা।

“প্রথম বছর খরচ বেশি। দ্বিতীয় বছর থেকে খরচ অর্ধেকে নেমে আসে। আবার ফলনও প্রথম বছরের চেয়ে বেশি হয়।”

উলাশির কাঠুরিয়া মাঠে খোরশেদের কুলবাগান।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাগানজুড়ে বাউ কুল, আপেল কুল ও নারকেল কুল ধরে আছে। ফলের ভারে স্বল্প উচ্চতার গাছগুলো নুইয়ে পড়েছে।

“নভেম্বরে কুল বাজারজাত শুরু করেছি। সাধারণত জানুয়ারির শেষের দিকে এই কুল বাজারে আসে। তবে আমি আমার নার্সারিতে বিশেষ পদ্ধতিতে চারা তৈরি করে তিন মাস আগেই কুল বাজারে পাঠাতে পেরেছি।”

খোরশেদের কাছ থেকে চারা নিয়ে ওই এলাকার জাহানারা বেগম ও শফিকুল ইসলাম পাঁচ বিঘা জমিতে ওই কুল চাষ করেছেন।

শরিফুল বলেন, “পাখি ও কীটপতঙ্গের উপদ্রব থেকে রক্ষার জন্য কুলের পুরো বাগান নেট দিয়ে ঘিরে রেখেছি। পাশাপাশি কুলগুলিকে ব্যাগিং পদ্ধতিতে আটকে রেখেছি। ফলে একটি কুলও নষ্ট হয় না।

“এ বছর তিন বিঘা জমিতে কুল লাগাইছি। সপ্তায় ৪০০ কেজি করে কুল পাচ্ছি। প্রতি কেজি কুল পাইকারি ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়।”

বাগআচড়ার টেংরা মাঠে আজম মিয়া তিন বছর ধরে ১৫ বিঘা জমিতে কুল চাষ করছেন বলে জানান।

তিনি বলেন, “কুল চাষ করে সংসারে শান্তি ফিরেছে। এ বছর প্রতি বিঘা থেকে এক লাখ টাকার কুল বিক্রির আশা করছি।”