ময়মনসিংহের শরীফকে আবার সোনার নৌকায় সংবর্ধনা

ময়মনসিংহের তারাকান্দা-ফুলপুর আসনের সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদকে আবারও সোনার নৌকায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে; এবারের উপলক্ষ তারাকান্দা বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের জাতীয়করণ।

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2017, 07:36 AM
Updated : 18 Dec 2017, 07:49 AM

স্থানীয় রাজনীতিবিদরা ওই আয়োজন নিয়ে সমালোচনা করলেও এমপি শরীফ সেখানে নিন্দনীয় কিছু দেখছেন না। 

১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত তারাকান্দা বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ প্রায় এক বছর আগে সরকারি হয়। ওই কলেজের অধ্যক্ষ সাজ্জাদ আহমেদ ময়মনসিংহ-২ আসনের সাংসদ শরীফের ছোট ভাই। তিনিই সাংসদের হাতে সোনার নৌকা তুলে দেন।

কলেজের মাঠে রোববার সন্ধ্যায় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে ব্যাপক আয়োজন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজ রোড, কলেজের ফটক এবং মাঠে সাংসদের ছবি সম্বলিত চারটি তোরণ বসানো হয়। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন মানিকগঞ্জের সাংসদ কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম।

উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শামসুল আলম জানান, এলাকার প্রায় ১০ হাজার লোক এসেছিল মমতাজের গান শুনতে। আমন্ত্রিত অর্ধশতাধিক অতিথির জন্য খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা ছিল।

কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজিজুন নাহার লাকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কলেজ জাতীয়করণ হওয়ায় এমপি মহোদয়ের কৃতিত্বের জন্য তাকে কলেজের পক্ষ থেকে সোনার নৌকা উপহার দেওয়া হয়েছে। আর সাধারণ মানুষকে আনন্দ দিতেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।”

কয়েকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও কলেজ শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমপিকে উপহার দেওয়া নৌকায় দুই ভরি সোনা ছিল। সব মিলিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে খরচের বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি। অধ্যক্ষ সাজ্জাদ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ শরীফকে সোনার নৌকায় সংবর্ধনা দিলে সে সময় ব্যাপক সমালোচনা হয়।

রোববার আবারও তাকে সোনার নৌকা দেওয়ার সমালোচনা করে এ আসনে সাবেক সাংসদ হায়েতুর রহমান খান বেলাল বলেন, “অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না।”

এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “শেখ হাসিনা নিজের আরাম-আয়েশ ত্যাগ করে যেখানে মানুষের সেবায় কাজ করছেন, সেখানে এই সংবর্ধনার কোনো প্রয়োজন ছিল না। কলেজ জাতীয়করণ হওয়া আনন্দের বিষয়। কিন্তু বেশি আনন্দ এই সময় দলের জন্য ক্ষতিকর।”

ক্ষমতাসীন দলের এমপির জন্য এমন আয়োজনে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন এ আসনে বিএনপির সাবেক সাংসদ শাহ শহীদ সারোয়ারও।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “যেখানে পেঁয়াজ ও চালের দাম বাড়তি, সেখানে সোনার নৌকায় সংবর্ধনা নেওয়া হাস্যকর ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। সংবর্ধনার নামে এটা নির্বাচনী প্রচার। সাধারণ মানুষই এর মূল্যায়ন করে সময়মতো জবাব দেবে।”

এসব সমালোচনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এমপি শরীফ আহমেদ বলেন, “কলেজ জাতীয়করণ হওয়ায় তারাকান্দার মানুষ উচ্ছ্বসিত। তাই কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দিয়েছে। এতে সমালোচনা হওয়ার কিছু নেই।”