বিজয় দিবস কিংবা স্বাধীনতা দিবসে তাদের স্মরণে কোনো অনুষ্ঠান হয় না বলে শেরপুরের অনেকেই এখন তাদের সম্পর্কে জানে না।
সেদিনের ওই সংগ্রাম পরিষদের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত গোপালবাড়ি বটতলার ঘরটিও জরাজীর্ণ অবস্থায় অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে।
ওই সংগ্রাম পরিষদের সাত সদস্য ছিলেন অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, অ্যাডভোকেট আব্দুছ ছামাদ, নিজাম উদ্দিন আহম্মদ, মুহাম্মদ মুহসীন আলী, খন্দকার মজিবর রহমান, বিপ্লবী রবি নিয়োগী ও মো. আব্দুর রশীদ।
এদের মধ্যে তৎকালীন জাতীয় পরিষদ সদস্য (এমএনএ) আনিসুর রহমান এবং মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিজাম উদ্দিন আহম্মদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন। বাকি পাঁচজনের কোনো স্বীকৃতি নেই।
স্বজনরা মুক্তিযুদ্ধের এই পাঁচ সংগঠকেরও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান।
প্রয়াত সংগ্রাম পরিষদ নেতা মুহসীন আলীর স্ত্রী মহসিনা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার স্বামী মুক্তিযুদ্ধকালীন সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলেন; কিন্তু তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি।”
তিনি মহসীন আলীকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান।
বিপ্লবী রবি নিয়োগীর নাতনী সুদেঞ্চা নিয়োগী এবং আব্দুর রশীদের নাতি আব্দুর রাহিদ তন্ময়ও একই দাবি জানিয়েছেন।
শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন সংগ্রাম পরিষদের নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তাদের নেতৃত্বেই শেরপুরে মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ শেরপুর জেলা ইউনিট কমান্ডের সদস্য নুরুল ইসলাম হিরু বলেন, সংগঠকদের মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। তাই তারা মুক্তিযোদ্ধা হতে পারেননি। কিন্তু তারা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এটাই প্রকৃত সত্য।
“আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগ্রাম পরিষদে যারা ছিলেন তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়াটা এখন সময়ের দাবি।”
দেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব যারা দিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসক মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানে স্মৃতি সৌধ আছে, সেগুলো জরাজর্ণী হয়ে গেছে। সেগুলো সংরক্ষণে অর্থ বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।