রূপপুরে সাংবাদিককে মারধর: গ্রেপ্তার ৩

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে সাংবাদিকের উপর হামলার দুদিন পর পুলিশ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2017, 12:47 PM
Updated : 1 Dec 2017, 12:47 PM

শুক্রবার ঈশ্বরদী থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির জানান।

এরা হলেন ঈশ্বরদী উপজেলার আমবাগানের আব্দুর রহিমের ছেলে পিল্টন, একই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে ছোটন ওরফে বাদশা এবং বৈকুণ্ঠতলার আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে আবু দাউদ।

এদিকে মামলার মূল আসামিরা ধরা না পড়ায় সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপপুর প্রকল্পে যাওয়ার আগের দিন বুধবার ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য (পাবনা-৪) শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবিউল আলম বুদু সেখানে গেলে তার গাড়িবহর আক্রান্ত হয়। ওই সংবাদ সংগ্রহে গেলে হামলার মুখে পড়েন চার সাংবাদিক।

ডিলুর ছেলে ঈশ্বরদী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমালের নেতৃত্বে এই হামলা হয় বলে আহতদের অভিযোগ। 

ওই ঘটনায় ঈশ্বরদী উপজেলা যুবলীগ সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব সরকারের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫/৩০ জনকে আসামি করে ঈশ্বরদী থানায় বুধবার রাতে একটি মামলা হয়েছে। ডিবিসি নিউজের পাবনা প্রতিনিধি পার্থ হাসান বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।

ঈশ্বরদী থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার ঈশ্বরদীর রূপপুরে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি থাকায় রাষ্ট্রীয় কাজে সকল পুলিশ ব্যস্ত ছিল। তাই জোরালোভাবে অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে নজরদারী অব্যাহত রয়েছে।যেকোনো সময় মূল আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।

ওইদিনের হামলায় আহত হন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাবনা প্রতিনিধি সৈকত আফরোজ আসাদ, এটিএন নিউজ ও পরিবর্তন ডটকমের প্রতিনিধি রিজভী রাইসুল ইসলাম জয়, ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি পার্থ হাসান ও ক্যামেরাপার্সন মিলন হোসেন আহত হন।

তাদের মধ্যে সৈকত আফরোজ আসাদ ও রিজভী রাইসুল ইসলাম জয় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এদিকে, মামলার মূল আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় পাবনা ও ঈশ্বরদীর সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

পুলিশ সময়ক্ষেপণ করছে বলে তাদের অভিযোগ।

মাছরাঙা টেলিভিশনের উত্তরাঞ্চলীয় ব্যুরো প্রধান উৎপল মিরাজ বলেন, পেশাগত কাজের সময় সাংবাদিকদের উপর মন্ত্রী পুত্র ও তার ক্যাডারদের হামলার দুই দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ অজ্ঞাত কারণে তাদের গ্রেপ্তার করছে না।

অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার ও দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারেরও দাবি জানান এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।

পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান শহিদ বলেন, মন্ত্রীর ভয়ে পুলিশ প্রশাসন যদি আসামিদের গ্রেপ্তার না করে তাহলে তারা আইনের প্রতি অবহেলা করছেন।

তিনি আসামিদের গ্রেপ্তারসহ সাংবাদিকদের খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা উদ্ধারেরও দাবি জানান।

পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, আহত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম ঈশ্বরদীর কতিপয় লোক এই বিষয়টি মীমাংসার অপচেষ্টা এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। 

পাবনার এসপি জিহাদুল কবির বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। খোয়া যাওয়া মালামাল উদ্ধারসহ সকল আসামিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হবে। শুধু সময়ের ব্যাপার।”