ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ছেলে শিরহান শরীফ তমালের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে বলে আহতদের অভিযোগ।
ঈশ্বরদী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তমাল উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতির বাড়ি ভাংচুরের মামলারও আসামি।
হামলায় আহত সাংবাদিকদের মধ্যে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাবনা প্রতিনিধি সৈকত আফরোজ আসাদ, ডিবিসির জেলা প্রতিনিধি পার্থ হাসানসহ এটিএন নিউজের জেলা প্রতিনিধি রিজভী, সময় টিভির ক্যামেরাপারসন মিলন রয়েছেন।
বুধবার দুপুরে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প কার্যালয় নতুন হাট মোড়ে এই ঘটনা ঘটে বলে সাংবাদিকরা জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাবনা প্রতিনিধি সৈকত আফরোজ বলেন, “ভূমিমন্ত্রীর ছেলে তমালের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন রবিউল আলম বুদুর গাড়ি ভাংচুর করছিল। তা দেখে আমরা ছবি তুলতে গেলে হামলাকারীরা আমাদের মারধর শুরু করে। কারও মোবাইল ফোন, কারও ল্যাপটপ ছিনিয়ে নিয়ে তা ভেঙে ফেলে তারা।”
আহত সাংবাদিকরা স্থানীয় হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে চাইলে সেখানেও হামলাকারীরা চড়াও হন বলে জানান সৈকত আফরোজ। পরে শহর থেকে অন্য সহকর্মীরা গিয়ে তাদের রক্ষা করেন।
সাংবাদিকদের উপর হামলার খবর শুনেছেন বলে জানিয়েছেন পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের উপর হামলা হয়েছে বলে শুনেছি। তদন্ত করে ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।”
গত মে মাসে ঈশ্বরদী উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের বাড়িতে হামলার পর তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার বিশ্বাসের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তমাল। তার বিরুদ্ধে হামলা-হুমকির আরও অভিযোগ রয়েছে।
আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের নেতা ও দলের পাবনা জেলা কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বুদু তার গাড়িবহর ও সাংবাদিকদের উপর হামলার জন্য মন্ত্রীপুত্র তমালকে দায়ী করে বলেছেন, এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “একটি প্রকল্প উদ্বোধনের প্রধানমন্ত্রীর আগামীকাল রূপপুরে আসার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষে দুপুরের দিকে আমার নেতা-কর্মীরা ওই এলাকায় পোস্টার লাগাচ্ছিল।
“এ সময় ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ছেলে শিরহান শরীফ তমাল, রূপপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব সরকার, ও স্থানীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রনির নেতৃত্বে ৩৫ থেকে ৪০ জন আমার নেতা-কর্মীদের উপর হামলা ও আমার গাড়ি ভাংচুর করে।”
বুদু বলেন, “প্রথমে তারা গুলি চালিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে। পরে তাদের হাতে থাকা পিস্তলের বাট দিয়ে আমার নেতা-কর্মীদের মারধর করে ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে হামলাকারীরা তাদের উপরও হামলা চালায়।”
হামলায় নিজের সমর্থক প্রকৌশলী সৈকত আরেফিন চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন বলে বুদু জানান। আরেফিনকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।