যুদ্ধাপরাধী ঘোড়ামারা আজিজের মৃত্যুদণ্ড: গাইবান্ধায় মিষ্টি বিতরণ

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা আবু সালেহ মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ মিয়া ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ ছয় জনের মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ হয়েছে গাইবান্ধায়।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2017, 12:20 PM
Updated : 22 Nov 2017, 01:01 PM

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগ, জাসদ, জাতীয় পার্টি, সিপিবি ও বাসদ একসঙ্গে বুধবার দুপুরে আনন্দ মিছিল করেছে।

বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে।

আব্দুল আজিজ মিয়া

দণ্ডিতরা হলেন আব্দুল আজিজ মিয়া (৬০), মো. রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু (৬৩), আবু মুসলিম মোহাম্মদ আলী (৬০),  মো. নাজমুল হুদা (৬২), মো. আব্দুর রহিম মিঞা (৬৪) ও মো. আব্দুল লতিফ (৬৩)।

এদের মধ্যে প্রথম পাঁচজন পলাতক রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুন্দরগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে একটি আনন্দ মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

জেলা আওয়ামী যুবলীগও দুপুরে গাইবান্ধা শহরে একটি আনন্দ মিছিল করেছে।

রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মামলার সাক্ষী সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপুর ও মজুমদার গ্রামের আব্দুর রশিদ, রফিকুল ইসলাম, রাজা মিয়া এবং সুন্দরগঞ্জের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমদাদুল হক বাবলু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাজেদুল হক আনন্দ প্রকাশ করেন।

রায়ে আনন্দ প্রকাশের পাশাপাশি তারা পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করে অবিলম্বে রায় কার্যকরের দাবি জানান।

পাশাপাশি মামলার সাক্ষী ও নিহতের পরিবার-পরিজনদের জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী চক্রের হামলার হাত থেকে নিরাপত্তা বিধানেরও দাবি জানান তারা।

জেলা যুবলীগ সভাপতি সরদার মো. শাহীদ হাসান লোটন ও সাধারণ সম্পাদক শাহ আহসান হাবীব রাজীব তাদের প্রতিক্রিয়ায় ঘোড়ামারা আজিজের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে এ অঞ্চলের জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে বলে জানান।

জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফরহাদ আব্দুল্লাহ হারুন বাবলু পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকরের দাবি জানান।

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সৈয়দ শামস্-উল আলম হিরু প্রত্যাশিত রায় পেয়েছেন জানিয়ে দ্রুত কার্যকর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গাইবান্ধা জেলা ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার গৌতম চন্দ্র মোদক বলেন, “ঘোড়ামারা আজিজসহ অন্যান্য আসামিদের সকলের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সন্তুষ্ট ও ভীষণ খুশি হয়েছি। যারা পলাতক রয়েছে তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।”

মামলার  বাদী আনিছুর রহমান সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমিসহ আমার পরিবার এ রায়ে খুশি। তবে অবিলম্বে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারসহ রায় কার্যকর করা হলে আরও খুঁশি হব।”

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, রায় ঘোষণার পর তার ও তার পরিবারসহ সাক্ষীদের উপর স্বাধীনতা বিরোধী চক্র যেকোনো মুহূর্তে হামলা চালিয়ে জীবন নাশের মতো ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই এ রায় যতদিন কার্যকর না হয় ততদিন বাদী ও সাক্ষীর স্বজনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।