মঙ্গলবার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সিলেটের গোয়াইনঘাটের তামাবিল সীমান্ত হয়ে তিনি ভারত যান বলে ইমিগ্রেশন পুলিশের এসআই এমএ হান্নান চৌধুরী জানান।
হান্নান চৌধুরী বলেন, “মঙ্গলবার বেলা সোয়া ২টার দিকে হান্নানসহ অন্যরা ভারতের উদ্দেশে তামাবিল ইমিগ্রেশন ত্যাগ করেন। হান্নান দুদকের মামলার আসামি কিনা আমাদের জানা নেই। এজন্য তাকে দেশ ছাড়তে বাধা দেওয়া যায়নি। তবে পরে তিনি ফিরে এলে গ্রেপ্তার করা হবে।”
সীমান্ত অতিক্রম করার সময় হান্নান পরিবারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা জজ আদালতে পিপি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজও সপরিবারে ছিলেন।
মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত সিলেট মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান।
এদিকে, দেশ ছাড়ার দুইদিন আগে (১৩ নভেম্বর) একটি অনুষ্ঠানে হান্নান ও সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এসএম রোকনউদ্দিনের ছবি ফেইসবুকে পাওয়া গেছে।
পুলিশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিমানবন্দর থানার হাউজিং এস্টেট এলাকায় হান্নানের বাসায় একটি অনুষ্ঠানে রোকন উদ্দিনকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেছে অতিরিক্ত কমিশনার এসএম রোকনউদ্দিনকে।
এ ব্যাপারে রোকনউদ্দিন বলেন, “এটা একটা পারিবারিক অনুষ্ঠান ছিল। উনি যে আসামি আমি জানতাম না।”
সুনামগঞ্জের বোরো ফসলহানির পর গত ২ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমদ বাদী হয়ে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি, অনিয়ম ও কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, ঠিকাদারসহ ৬১ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ২১ নম্বর আসামি করা হয় মেসার্স হান্নান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হান্নানকে।
এছাড়া গত ৩ অগাস্ট সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক বাদী হয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১৪১ জনকে আসামি করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করেন।
এ মামলায় ৪৬ ঠিকাদারকে আসামি করার পাশাপাশি দুদকের মামলার ৬১ আসামির সবাই রয়েছেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে এই মামলাও দুদককে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।
গত ১৬ অগাস্ট মামলার অন্যতম আসামি সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও নুর ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার খায়রুল হুদা চপল সিঙ্গাপুরে যাওয়ার সময় দুদকের হাতে গ্রেপ্তার হন।
চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিলে অকাল বন্যায় সুনামগঞ্জের হাওরের বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক ফসলহানির ঘটনা ঘটে। বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় সুনামগঞ্জসহ দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। ওই সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সুনামগঞ্জ সফরে গেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।