টুঙ্গিপাড়ায় স্কুলে চোখের চিকিৎসায় ‘লিটল আই ডাক্তার’

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চোখ পরীক্ষা করবে তাদেরই কয়েকজন সহপাঠী। এদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘লিটল আই ডাক্তার’। তারা পরীক্ষা করে সমস্যা চিহ্নিত করার পর চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্র দেবেন।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2017, 05:05 PM
Updated : 16 Nov 2017, 05:05 PM

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া জিটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এই কর্মসূচি এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।

এখন  চোখের সমস্যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না বলে কর্মসূচিতে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

গোপালগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ জানান, চলতি বছরের মে মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজরিত জিটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

তিনি জানান, কর্মসূচির আওতায় স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণির ক্যাপ্টেন ও শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে দল গঠন করে  চোখ পরীক্ষা করার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের এই দলই স্কুলের ‘লিটল আই ডাক্তার’।

পরিচালক সাইফুদ্দিন জানান, লিটল আই ডাক্তার দল প্রতি ১৫ দিন পর পর শ্রেণির শিক্ষার্থীদের চোখ পরীক্ষা করে তাদের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা চিহ্নিত করে। পরে শেখ ফজিলাতুন্নেছা চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে খবর দেয়।

“হাসপাতালের গাড়িতে করে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চোখের চিকিৎসা ও প্রয়োজনে চশমা দেওয়া হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীর চোখে অন্য কোনো সমস্যা থাকলে তারও চিকিৎসা দেওয়া হয়।”

লিটল আই ডাক্তার জিটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্র রিয়াজুল ইসলাম, ৯ম শ্রেণির ছাত্র দ্বীপ সাহা, ৮ম শ্রেণির ছাত্র রিংকু দাড়িয়া জানায়, চক্ষু হাসপাতালের এ কর্মসূচিতে চোখের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষার পদ্ধতি তাদের শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে পদ্ধতি অনুসরণ করে তারা সহপাঠীদের চোখ প্রতি ১৫ দিন পর পর পরীক্ষা করে।

জিটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোপাল বোস বলেন, “এ প্রোগ্রাম আমাদের স্কুলে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এটি এক ধরনের সামাজিক আন্দোলন। লিটল আই ডাক্তাদের পাশাপাশি চক্ষু হাসপাতালের টিম এ স্কুলে নিয়মিত আসে। এ কারণে এখানে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিশক্তি সুরক্ষিত রয়েছে।”

জেলার স্কুল গুলোতে অসংখ্য শিক্ষার্থী চোখের সমস্যায় ভুগছে। চশমা বা চিকিৎসার অভাবে তাদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। মহৎ এ উদ্যোগ পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক স্কুলে চালু করা হলে শিক্ষার্থীদের চোখের সমস্যা দূর হবে বলে তিনি মনে করেন।

লিটল আই ডাক্তার প্রোগ্রামের সংগঠক দীপক সরকার বলেন, এ প্রোগ্রামের আওতায় স্কুল শিক্ষার্থীদেরই লিটল আই ডাক্তার তৈরি করা হয়। তাদের সহায়তায়  দৃষ্টিশক্তি সমস্যায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করা হয়। পরে তাদের সব ধরনের চক্ষু সেবা প্রদান করা হয়।

গোপালগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, লিটল আই ডাক্তার প্রোগ্রাম এ বছর শুরু হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এ প্রোগ্রাম জেলার সব স্কুলে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।