সরেজমিনের দেখা গেছে, রুমা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে রুমা খাল থেকে পাথর উত্তোলন করছেন রুমা বাজার কমিটি সভাপতি সোনা ব্যবসায়ী উজ্জ্বল ধর।
আর এসব পাথর পরিবহনের জন্য অবৈধভাবে বুলডোজার দিয়ে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করছেন তিনি।
উজ্জ্বল ধর পাথর উত্তোলনের অনুমতি নেননি বলে স্বীকার করেছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমি একা না। আমার সঙ্গে ওই এলাকার বাসিন্দা জনি ও লুপ্রু মারমাসহ অনেকেই রয়েছেন।”
তবে জনি ও লুপ্রু মারমা তার এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, তারা পাথর উত্তোলন কাজে কোনোভাবে জড়িত নন।
তাদের এই ঔদ্ধত্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগছে এলাকাবাসী। তাদের আশঙ্কা, এভাবে পাথর উত্তোলন করা হলে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটতে পারে। দেখা দিতে পারে পানিসংকট।
রোববার ওই এলাকায় পাথর উত্তোলন দেখতে গেলে পুনর্বাসনপাড়ার বাসিন্দা খ্যাইসামং মারমা অভিযোগ করেন, “আমার জায়গা থেকে আমাকে না বলে উজ্জ্বল বাবু শ্রমিক লাগিয়ে পাথর তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি কোথায় গেলে বিচার পাব জানি না।”
রুমা খালের ক্যোওয়াইবওয়া পাড়া থেকে পুনর্বাসন পাড়া, ভাগ্যমনি পাড়াসহ বগামুখপাড়া পর্যন্ত পাঁচ-ছয় কিলোমিটার এলাকায় শতাধিক শ্রমিককে পাথর উত্তোলন করতে দেখা গেছে।
কক্সবাজারের চকরিয়া এলাকার বাসিন্দা পাথরশ্রমিক বেলাল উদ্দিন বলেন, পাথর তুলে স্তূপ করে রাখা তার কাজ। প্রতি ঘনফুটে তিনি পান ১০ টাকা করে। তারা একদলে ১৭ জন শ্রমিক কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
আবুল কাশেম নামে আরেক শ্রমিক বলেন, তাদের দলে রয়েছেন ৫০ জন শ্রমিক। তারা সাত দিন ধরে পাথর উত্তোলন করছেন বলে জানান।
রুমা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শৈমং মারমা অভিযোগ বলেন, “পাহাড়ের মানুষ ঝিরি-ঝরণা আর খালের পানি পান করে জীবন বাঁচায়। পাথর না থাকলে পানির সংকটে জীবন বিপন্ন হতে পারে। পাথর উত্তোলনের দ্রুত নীতিবাচক প্রভাব পড়ছে এখানে। আমরা উদ্বিগ্ন। কিন্তু কিছু করার নেই।
“উজ্জ্বল ধর প্রভাবশালী, স্বর্ণকার ও বাজার কমিটির সভাপতি। তাকে আবার সহযোগিতা করছেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকার ব্যবসায়ী মো. ইমরান, রুমার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল রাজ্জাকের ছোট ভাই আবদুল মাবুদ, চিংসাথোয়াই মারমা বিপ্লব প্রমুখ।”
এ বিষয়ে থানছি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে রুমা উপজেলা) মো. জাহাঙ্গীর আলম রোববার বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। পাথর উত্তোলনকারীদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।”
এর দুই দিন পরে বুধবার তিনি বলেন, ১৯ তারিখে ওই এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।