সেদিনের সেই ভয়াল ঝড়ে স্বজন হারানোরা এখনও তাদের স্মৃতি বয়ে চলেছেন। নিখোঁজ অনেকের স্বজন এখনও তাদের ফেরার অপেক্ষায় থাকেন।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে সেদিন দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকা ধংসস্তূপে পরিণত হয়। কয়েক লাখ পরিবার সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে বরগুনা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝালকাঠি, ভোলা।
সেদিন ভোলা সদর, চরফ্যাশন, মনপুরা ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার প্রাণহানি, নিখোঁজ ও আহত হয় অনেকেই। ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাজার হাজার ঘরবাড়ি।
ভোলা সদরের তেঁতুলিয়া নদী, চরফ্যাশন ও লালমোহন উপজেলার মেঘনা নদীর পাঁচ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়।
সিডরের আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রপ্রসাদ, কুলগাজী ও গাছালীমোড় এলাকা।
কূলগাজী গ্রামের রোশনা বেগম বলেন, “সিডরে আমার দুই বছরের মেয়ে রোজিনাকে হারিয়েছি। মেয়ে হারানোর স্মৃতি আজও ভুলতে পারিনি। ওর জন্য কেঁদে কেঁদে দিন কাটে।”
“মেয়ে থাকলে এখন অনেক বড় হতো। অন্য ছেলেমেয়েদের মতো লেখাপড়া করত, খেলাধুলা করত,” বলেন তিনি।
রোশনার মতো সিডরের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবার এখনও কান্নাকে সঙ্গী করেই দিন কাটাচ্ছে। যারা নিখোঁজ হয়েছেন এখনও তাদের ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন স্বজনরা।
সেদিন সমুদ্র থেকে ফিরে মো. মোস্তফা বলেন, “এখনও কোনো বাতাস বা ঝড় দেখলে ভয় হয়। কোন দিন আবার সিডরের মতো হয়।
ভোলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির উপ-পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ভোলায় ২০০ সাইক্লোন শেল্টার প্রয়োজন।”
ভোলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ইসিআরআরপি প্রকল্পের আওতায় গত এক বছরে ১৪টি নতুন সাইক্লোন সেল্টার নির্মিত হয়েছে। এমডিএসপি প্রকল্পের আওতায় ৪২টির নির্মাণ কাজ চলছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরও ৯৭টি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় থেকে জানা যায়, বর্তমানে সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে ব্যবহৃত হয় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এগুলোর সংখ্যা হলো ৭৩২।