‘দাস পার্টির খোঁজে’র লেখক মোর্শেদের জামিন

একটি মানহানির মামলায় জামিন পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘দাস পার্টির খোঁজে’র লেখক হাসান মোর্শেদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস মিয়া।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2017, 03:15 PM
Updated : 14 Nov 2017, 03:23 PM

মঙ্গলবার হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ আমলি আদালতের বিচারিক হাকিম রাজিব আহমদ তালুকদার এ আদেশ দেন বলে জানান আইনজীবী এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন।

হাসান মোর্শেদের লেখা এই বইয়ে ‘মানহানিকর’ লেখার অভিযোগে গত ১৭ অক্টোবর আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মিছবাহ উদ্দিন ভুইঁয়া মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস মিয়ার প্ররোচনায় ‘দাস পার্টির খোঁজে’ বইয়ের ৬০ পৃষ্ঠায় বাদীর ভাই কাকাইলছেও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল হক ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে মানহানিকর কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে নুরুল হক আওয়ামী লীগ বিরোধী ছিলেন এবং একজন সমর্থকের গলা থেকে নৌকার প্রতীক ছিঁড়ে ফেলেছেন বলে বইয়ে লেখা হয়, যা মিথ্যা ও মানহানিকর বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

এছাড়া বইটির ৭০ ও ৭১ পৃষ্ঠায় বাদীর পরিবারকে পাকিস্তানের দালাল বলা হয়েছে।

এসব তথ্য উপস্থাপন করায় তার দুই কোটি টাকার মানহানি হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন মামলার বাদী।

বইটির লেখক হাসান মোর্শেদ বলেন, ‘‘আমি বইয়ের লেখার কাজে যখন সেখানে গিয়েছিলাম তখন তারা (মিছবাহ) বলছিলেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার কয়েকদিন আগে ১১ জনের একদল সশস্ত্র রাজাকার এখানে ধরা পড়ে। দাসপার্টি এই রাজাকারদের হত্যা করেছে।"

মিছবাহ এই রাজাকারদের হত্যার সমালোচনা করেন বলে মোর্শেদ তার বইতে উল্লেখ করেন।

মোর্শেদ বলেন, যুদ্ধের সময় রাজাকারদের শাস্তি দেওয়ার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাকে অভিযুক্ত করছে। এটা হতে পারে না এবং এই ঘটনার বিশ্লেষণ বইয়ে প্রকাশের কারণে মানহানির মামলা করেছেন মিছবাহ।

হাসান মোর্শেদ বলেন, ১৯৭৩ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। ১লা মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাধীনতার প্রয়োজনে সংঘটিত কোনো হত্যাকাণ্ডের মামলা করা যাবে না। সেই অর্থে এরকম কোনো ঘটনার সমালোচনাও পরোক্ষভাবে করা যায় না।

আজমিরীগঞ্জ উপেজলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. তৈয়বুর রহমান খান বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মিছবাহ তার সহপাঠী ছিলেন।

“আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধে যাই তখন নানা বাহানায় যুদ্ধে অংশ নেননি মিছবাহ।  মুক্তিযোদ্ধের সময় মিছবাহের পরিবারের কোনো ভূমিকাই ছিল না।”

তৈয়বুর বলেন, মিছবাহের বড় ভাই নুরুল হক ভুঁইয়া সে সময়  ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭০ এর নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ছিলেন। 

“যুদ্ধের সময় সরাসরি রাজাকার না হলেও পাকিস্তানিদের সহায়তা করেছে তাদের পরিবার। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে সুবিধা নিতেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি শুরু করেন মিছবাহের পরিবার।”