হিমালায় পর্বতমালার অংশ কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিড় করছেন ঠাকুরগাঁয়ের সদর উপজেলার বুড়িরবাঁধ এলাকায়।
এছাড়াও ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তা, বাসস্ট্যান্ড, টাংগন ব্যারেজ, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে উত্তর দিকে তাকালেও কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভারতের সিকিম ও নেপালের সীমান্তাঞ্চলে অবস্থিত এ পর্বতের চূড়া অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ওই এলাকাগুলো থেকে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন তারা।
২০১৩ সালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আকচা ইউনিয়নের বুড়ির বাঁধ এলাকা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা চূড়ার ছবি প্রথম ক্যামেরাবন্দি করেন প্রকৃতি প্রেমী রেজাউল হাফিজ রাহী। এরআগে শুধু পঞ্চগড় থেকে বিশেষ একটা সময়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় বলে প্রচলিত ছিল।
টাংগনব্যারেজ এলাকার সিরাজুম মনির বলেন, “টাইগার হিলে ঊষার সময় দেখা গেলেও ঠাকুরগাঁও থেকে এত ভোরে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায় না। সকাল ৬টা থেকে সূর্যকিরণ যখন তেজ হতে থাকে তখন স্পষ্ট হতে থাকে।
“সকাল ১০টা পর্যন্ত বেশ ভালো দেখা যায়। তারপর আস্তে আস্তে ঝাপসা হতে থাকে। তবে শেষ বিকালে সূর্যকিরণ আবার যখন তির্যক হয়ে পড়ে বরফের পাহাড়ে তখন অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা।”
বুড়িরবাঁধ এলাকার মো. মুসা চৌধুরী বলেন, “গত বছর শীতের তীব্রতা বেশি থাকায় কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া ভালোভাবে দেখা যায়নি। তবে এবার শীতের তীব্রতা কম থাকায় চূড়াটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।”
“সূর্যের হালকা আলোয় চূড়াটি জ্বল জ্বল করছে। সূর্যের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চূড়াটি লাল হয়ে যায়।”
রেজাউল হাফিজ রাহী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১৩ সালে বুড়িরবাঁধ এলাকায় পাখির ছবি তুলতে গিয়ে প্রথম কাঞ্চনজঙ্ঘার সর্বোচ্চ চূড়ার ছবিটি ক্যামেরাবন্দি করি। এরপর তা ফেইসবুকে পোস্ট করি।
“এরপর থেকেই মানুষ জেনেছে শুধু পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে নয়, ঠাকুরগাঁও থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘা চূড়া দেখা যায়।”
কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য ঢাকা থেকে এসেছেন মো. খোকন ইসলাম।
তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে ফেইসবুকে কাঞ্চনজঙ্ঘার ছবি দেখেছি। আগে জানতাম কাঞ্চনজঙ্ঘা শুধু তেঁতুলিয়া থেকে দেখা যায়। কিন্তু ঠাকুরগাঁও শহরে এসে এবার সেটি দেখছি।”
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আওয়াল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এতদিন শুনে এসেছি শুধুমাত্র তেঁতুলিয়া থেকে ভারতের কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখা যায়। ঠাকুরগাঁওয়ে যোগ দেওয়ার পর জেনেছি এখান থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখা যায়, নিজেও সেই দৃশ্যে উপভোগ করেছি।”