৫৭ ধারার মামলায় তদন্ত ছাড়া গ্রেপ্তার নয়: আইজিপি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় তদন্ত ছাড়া সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক।

চাঁদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2017, 08:59 AM
Updated : 12 Nov 2017, 09:08 AM

চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শনিবার রাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।

আইজিপি শহীদুল হক বলেন, “৫৭ ধারায় মামলা হলে তদন্ত ছাড়া কোনো সাংবাদিককে হয়রানি বা গ্রেপ্তার করা হবে না। এ বিষয়ে আমি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রথম সুপারিশ করেছি এবং কাজ করেছি।”

দেশের বহু জেলা থেকে ৫৭ ধারায় অনেক মামলাসহ অভিযোগ তার কাছে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সেগুলো আমি দেখেই এই নির্দেশনা দিয়েছি।”

তবে দুয়েকটি অভিযোগ তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়ায় সেগুলোর ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন বলে জানান তিনি।

আইসিটি আইনের ৫৭ ধারাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি দাবি করে সেটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন সম্পাদক পরিষদসহ গণমাধ্যমকর্মীরা। 

৫৭ ধারায় বলা হয়েছে- ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কোনো ব্যক্তির তথ্য যদি নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ করে, এতে যদি কারও মানহানি ঘটে, রাষ্ট্র বা ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি অনধিক ১৪ বছর কারাদণ্ড এবং অনধিক এক কোটি টাকা জরিমানা।

২০০৬ সালে হওয়া এ আইনটি ২০০৯ ও ২০১৩ সালে দুই দফা সংশোধন করা হয়। সর্বশেষ সংশোধনে সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর থেকে ১৪ বছর কারাদণ্ড করা হয়। আর ৫৭ ধারার অপরাধকে করা হয় অজামিনযাগ্য।

পুলিশ সুপার হিসেবে প্রথম তিন বছর তিনি চাঁদপুরে কাজ করেছেন জানিয়ে বলেন, “এই জেলাকে আমি সবসময় আমার সেকেন্ড হোম মনে করি। এখানকার সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা সবসময় পুলিশসহ প্রশাসনকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করে থাকেন।”

পুলিশ-সাংবাদিক সম্পর্ক নিয়ে আইজিপি বলেন, “আমি যে বইটি লিখেছি, সেখানে সাংবাদিক ও পুলিশের সম্পর্ক কেমন, তা তুলে ধরেছি। সেই ধারণাটা পড়লে সাংবাদিকেরা অনেক কিছু বুঝতে পারবেন।”

সমাজে কাজ করতে হলে সাংবাদিক ও পুলিশ সুসম্পর্ক থাকতে হয় বলে আইজিপি মনে করেন।

তার কাছে প্রতিদিন বাংলাদেশের যেসব পত্রিকা যায় সেখানের খবরগুলো খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং এতে ফলাফলও আসে বলে জানান তিনি।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শরীফ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহীনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মনির উজ-জামান, ডিআইজি (প্রশাসন ও শৃঙ্খলা) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, আইজিপির স্টাফ অফিসার আক্তার হোসেন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথিসহ অন্য অতিথিদের সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।

মতবিনিময় সভায় স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক, জাতীয় গণমাধ্যমের বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আইজিপি চাঁদপুর প্রেসক্লাবকে পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন।