হিন্দুবাড়িতে হামলায় ‘চার ইন্ধনদাতা চিহ্নিত’: পুলিশ

রংপুরে ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চার ‘ইন্ধনদাতাকে’ চিহ্নিত করছে পুলিশ।

রংপুর প্রতিনিধিশাহজাদা মিয়া আজাদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2017, 01:49 PM
Updated : 11 Nov 2017, 04:48 PM

শনিবার বিকালে রংপুরের এসপি মিজানুর রহমান বলেন, এদের একজনকে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে।  

শুক্রবার রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হন।

এসপি মিজানুর বলেন, “হামলার আগে শলেয়াশাহ এলাকায় মানববন্ধন চলাকালে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলা সভাপতি ইনামুল হক মাজেদি, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য মাসুদ রানা, সদরের খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও শলেয়াশাহ জামে মসজিদের ইমাম সিরাজুল ইসলাম এবং খলেয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য মোস্তাইন বিল্লাহ উস্কানিমূলক বক্তব্য দেন।

“পরে তাদের নেতৃত্বে জামায়াত-শিবির এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারাই হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটের ইন্ধনদাতা।”  

তিনি আরও বলেন, ইন্ধনদাতাদের মধ্যে জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের বাড়িতে অভিযান চালালেও কাউকে পাওয়া যায়নি।  

এ ঘটনায় আটক ৫৩ জন ও আহতরা সবাই স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী বলে এসপি মিজানুরের ভাষ্য।   

শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, “একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যেই তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।”

দশ বছর ধরে এলাকায় থাকেন না সেই যুবক

যে যুবকের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে হিন্দু বসতিতে হামলা চালানো হয়েছে সেই টিটু রায় গত ১০ বছর ধরে এলাকায় থাকেন না। লেখাপড়াও জানেন না তিনি।

“ফেইসবুকে তার দেওয়া ধর্ম অবমাননার স্ট্যাটাস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এলাকায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটানো হয়েছে,” “ বলেন এসপি মিজানুর।

টিটুর মা জিতেন বালা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলে কোনোদিনও স্কুলে যায়নি। সে গ্রাম্য কবিরাজ। জীবিকার সন্ধানে দশ বছর আগে এলাকা ছাড়ে টিটু। তবে আমার সাথে যোগাযোগ রয়েছে তার।”

এ ঘটনায় গঙ্গাচড়া থানার এসআই রেজাউল করিম ও কোতোয়ালি থানায় এসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছেন। এসব মামলায় দুই হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে।

কোতোয়ালি পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ থানার মামলায় ইনামুল হক মাজেদি, মাসুদ রানা, সিরাজুল ইসলাম ও মোস্তাইন বিল্লাহকে প্রধান আসামি দেখানো হয়েছে।