‘চুরির অভিযোগে’ নির্যাতনের পর কিশোরের বিরুদ্ধে মাদক মামলা

সিলেটে গোয়াইনঘাটে এক কিশোরকে ‘চুরির অভিযোগে’ নির্যাতনের পর মাদক মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2017, 01:56 PM
Updated : 6 Nov 2017, 01:56 PM

ওই কিশোরকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ঘটনা তদন্তে সোমবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে পুলিশ।

সেইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে নির্যাতনকারী ইসবর আলীকে (৬৫)। আর মামলার বাদী উপজেলার সালুটিকর ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সুশংকর পালকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আলম জানান, গত ২৯ অক্টোবর উপজেলার মানাউড়া পূর্বপাড়া গ্রামে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে।

ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু হাসনাত খানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের দুটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, মাটিতে পড়ে আছে এক কিশোর। দুই হাত ও পা একসঙ্গে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় তাকে কঞ্চি দিয়ে পেটাচ্ছেন একজন। যিনি পেটাচ্ছেন তিনি গ্রামের বাসিন্দা ইসবর আলী বলে এলাকার লোকজন নিশ্চিত করেছেন।

ঘটনার পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে কিশোরটির বিরুদ্ধে মাদক মামলা দায়ের করে তাকে সিলেট কারাগারে পাঠানো হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা শামসুল বলেন, ছেলেটির বিরুদ্ধে মাদক আইনে করা মামলার বাদী সালুটিকর দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক সুশংকর পাল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়াইনঘাট থানার উপ পরিদর্শক পীযূষ কান্তি দাস।

এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে সুশংকর পালকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, ওই দিন (২৯ অক্টোবর) একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ইয়াবা বিক্রির সময় তাকে ১২টি ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ। এ সময় গ্রামের আজিজুর রহমান ও মোহাম্মদ আবদুল্লাসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

তবে ছেলেটির মায়ের অভিযোগ, গরু চুরির অভিযোগে গত বছরের ১১ মে গোয়াইনঘাট থানায় আব্দুল্লাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তারা। আবদুল্লার চাচাত ভাই হচ্ছেন আজিজুর। পরে টাকা চুরির অভিযোগে তার ছেলেকে নির্যাতন ঢাকতেই মাদক আইনে মামলা সাজিয়েছে তারা।

এ বিষয়ে সুশংকর পাল জানান, ওই দিন স্থানীয় কয়েকজন লোক ইয়াবাসহ ছেলেটিকে ধরে পুলিশে দেয়। এলাকাবাসী সাক্ষী হওয়ায় মাদক আইনে মামলা করা হয়েছে।

এরআগে নির্যাতন ও ভিডিও ধারণের বিষয়টি জানতেন না বলে দাবি করেন তিনি ।