স্বর্ণালী পবা উপজেলার টেগাটাপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে। সে স্থানীয় নোনামাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
স্বর্ণালীর মা গৃহিণী রুমা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জন্মের পর তার ডান হাতে একটি কালো দাগ দেখা যায়। সেটাই দিন দিন বড় হচ্ছে।
“চার-পাঁচ বছর বয়সে এটি বেড়ে যায়। ওই সময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ মোয়াজ্জেম হোসেন ও রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আফরোজা নাজনীনকে দেখিয়েছি। তারা সে সময় একটি মলম দিয়েছিলেন। এতে কাজ হয়নি।”
এরপর এ রোগের চিকিৎসা নেই বলে লোকমুখে শোনার পর তারা আর কোনো চিকিৎসককে দেখাননি বলে জানান রুমা বেগম।
তিনি বলেন, “হাতটা দিন দিন মোটা ও ভারি হয়ে যাচ্ছে। হাতে ছোট ছোট গুটি ও মাংসপিণ্ডর মতো বেড়ে উঠছে। মাঝে মাঝে পুঁজ বের হয়। তখন ব্যথায় কাতর হয়ে ওঠে।”
মেয়েকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন রুমা বেগম।
স্বর্ণালী বলেন, স্কুলে গেলে তার পাশে অন্যরা বসতে চায় না। তাকে দেখে সহপাঠীরা হাসাহাসিও করে।
“এ কারণে প্রায়ই স্কুলে যাই না। শিক্ষকরা কিছু না বললেও ক্লাসে আমার ভালো লাগে না। আমি সুস্থ হতে চাই। সুস্থ জীবনে ফিরে লেখাপড়া শিখতে চাই।”
স্বর্ণালীর বাবা আবদুল মান্নান দুর্গাপুর দাওকান্দি কলেজের পিওন।
তিনি বলেন, তার কলেজের একজন শিক্ষক পত্রপত্রিকায় সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামণির রোগ ও চিকিৎসার খবর দেখে তাকে জানিয়েছেন, চিকিৎসা করলে স্বর্ণালীর হাতওে ভাল হতে পারে।
কিন্তু মেয়েকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য তার নেই। তিনি চিকিৎসকসহ সচ্ছল ব্যক্তিদের কাছে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছেন।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন সঞ্জিত কুমার সাহা স্বর্ণালীর রোগের কথা শুনেছেন জানিয়ে বলেন, “এটি মুক্তামণির মতো একটি রোগ বলে প্রাথমিভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তার চিকিসার উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
গত ১১ জুলাই সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামণিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মুক্তামণি ‘হেমানজিওমা’ রোগে আক্রান্ত বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।