রাগীব আলী ও তার ছেলে জামিনে মুক্ত

চা বাগানের দেবোত্তর সম্পত্তি আত্মসাতের মামলায় দণ্ডিত শিল্পপতি রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইয়ের হাই কোর্টের দেওয়া জামিন আপিল বিভাগ বহাল রাখায় তারা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Oct 2017, 08:59 AM
Updated : 29 Oct 2017, 09:19 AM

রোববার বেলা দেড়টার দিকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তারা ছাড়া পান বলে জানিয়েছেন জেল সুপার আব্দুল জলিল। 

গত বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া নেতৃত্বাধীন বিচারপতি মুহাম্মদ ইমান আলী, বিচাপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজের আদেশ দেয়।

আব্দুল জলিল জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি সিলেটের তারাপুর চা বাগানের বন্দোবস্ত নিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতির মামলায় চারটি ধারায় এ দুজনের ১৪ বছর কারাদণ্ড দেয় আদালত।

“এরপর ৬ এপ্রিল প্রতারণা করে তারাপুর চা-বাগানের ভূমি আত্মসাত ও জালিয়াতির আরেক মামলায় রাগীব আলীর ১৪ বছর ও  ছেলে আবদুল হাইয়ের ১৬ বছর কারাদণ্ড হয়।”

জলিল জানান, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তারা। আদালত জামিন মঞ্জুর করলে রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরুদ্ধে আপিল করে।

“বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদন আপিল বিভাগ খারিজ করলে তাদের জামিন আদেশ বহাল থাকে।”

ঘটনাক্রম

১৯৯০ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি করে প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া সেবায়েত সাজিয়ে তারাপুর চা-বাগানের ৪২২ দশমিক ৯৬ একর দেবোত্তর সম্পত্তি রাগীব আলী দখল করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

১৯৯৯ সালের ২৫ অগাস্ট ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তারাপুর চা বাগান নিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়। পরে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের উপ-কমিটি গঠন করা হয়।

উপ-কমিটি চূড়ান্ত সুপারিশে তারাপুর চা-বাগান অবৈধভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে দলিলপত্র সৃষ্টি করে প্রতারণামূলকভাবে লিজি হিসেবে দখলে রাখার জন্য রাগীব আলীর বিরুদ্ধে অবিলম্বে ফৌজদারি ও দেওয়ানি উভয়বিধ মামলা করতে বলে।

প্রতারণার মাধ্যমে এই ভূ-সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় রাগীব আলী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন সিলেট সদরের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম আব্দুল কাদের।

তদন্ত শেষে গত বছরের ১০ জুলাই আদালতে দুটি মামলার অভিযোগপত্র দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান।

ওই বছরের ১২ অগাস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।

ওইদিন বিকালে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতের করিমগঞ্জ চলে গিয়েছিলেন ছেলেসহ রাগীব আলী। ২৩ নভেম্বর ভারতের করিমগঞ্জ ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে রাগীব আলী এবং এর আগে ১২ নভেম্বর ভারত থেকে জকিগঞ্জ এসে আবদুল হাই গ্রেপ্তার হন।