নদী ভাঙনে কুলাউড়ায় ১০ গ্রামে প্লাবন, ডুবেছে ফসল

টানা বৃষ্টিতে মনু নদের দুটি স্থানে বাঁধ ভেঙে মৌলভীবাজারে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে বহু ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

বিকুল চক্রবর্তী মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2017, 12:03 PM
Updated : 22 Oct 2017, 12:03 PM

কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুরে চাতলা সেতু সংলগ্ন এবং টিলাগাঁও এলাকায় এ দুটি ভাঙন হয়।

রোববার ধলাই নদসহ বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়ার পানি বিপদসীমার উপরর প্রবাহিত হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার রাতে হালকা বৃষ্টি শুরু হয়ে শুক্রবার ও শনিবার অবিরাম বৃষ্টিপাত হয়।

শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জুনাব আলী জানান, রোববার রাত ১২টার পর ইউনিয়নের চাতলাপুর বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে গ্রামে পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে পালকী ছড়া চা বাগান, ইটারঘাট, কালারায়ের চরসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়।

“অবস্থা দেখে অনুমান করা যায় এ অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে। তাছাড়া পানির স্রোতে মনু সেতুও এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।”

কুলাউড়ার টিলাগাঁও ইউনিয়নের আশ্রয় গ্রাম এলাকায় মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে ইউছুফপুর, বালিয়া, চাঁনপুর আংশিকসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছ।

কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম ভাঙনের স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন।

চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম বলেন, মনু নদীর দুটি এলাকায় বাঁধ ভেঙে উপজেলার কয়েকহাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, ধলাই নদসহ সবগুলো পাহাড়ি ছড়ার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে গ্রামে দ্রুত পানি প্রবেশ করে রাস্তাঘাট নিমজ্জিত করেছে।

ইসলামপুর ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম কালারায় বিল, শ্রীপুর, পাথারীগাঁও, কানাইদাশী ও গুলের হাওর গ্রাম, কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ গ্রাম, ছাইয়াখালি হাওর, পতনউষার ইউনিয়নের কেওলার হাওর, মুন্সীবাজার ইউনিয়নের রুপশপুর, শমশেরনগর ইউনিয়নের শিরাউলী, মরাজানের চর, সতিঝির গাঁও-এর বিস্তীর্ণ আমন ফসল নিমজ্জিত হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের সহকারী ব্লক সুপারভাইজর পূর্ণ কুমার সিংহ বলেন, প্লাবনের পানিতে ইসলামপুর ইউনিয়নে ২০০ হেক্টর জমির রোপিত আমন ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। শ্রীপুর এলাকার ধলাই নদের পুরাতন ভাঙন দিয়ে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে গ্রামে।

কমলগঞ্জ পৌরসভার আলেপুর গ্রামে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের পুরাতন ভাঙন দিয়েও পানি প্রবেশ করছে বলে তিনি জানান।

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শামছুদ্দীন আহমদ ফসল নিমজ্জিত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

কমলগঞ্জ ইউএনও মাহমুদুল হক আরও বলেন, উজানে ভারতীয় এলাকার বৃষ্টি না থামলে ও ধলাই নদের পানি না কমলে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের আরও কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ভাঙন হয়ে অবস্থার আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে।

অপর দিকে ভারতীয় ঢলে শ্রীমঙ্গল উপজেলার পাহাড়ি ছড়াগুলো ডুবে গিয়ে শনিবার রাতে ও রোববার ভোরে কয়েকশ বাড়িঘরে পানি উঠে ভোগান্তিতে পড়েন এলাকাবাসী।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবাশশেরুল ইসলাম বলেন, এ নিয়ে কয়েকদফা মানুষের বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে। এর সমাধানের জন্য শ্রীমঙ্গল শহর ও শহরতলীর উপর দিয়ে প্রবাহিত পাহাড়ি ছড়াগুলো খনন করা খুবই জরুরি। এ ব্যাপারে তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।