লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

হজ ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলেকে নিয়ে মন্তব্য করে মন্ত্রীত্ব ও দলীয় সদস্যপদ হারানো আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2017, 01:29 PM
Updated : 17 Oct 2017, 01:59 PM

সমন্বিত জেলা কার্যালয় বগুড়ার সহকারী পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম আদমদীঘি থানায় মঙ্গলবার মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অপর আসামি বগুড়া শহরের কালিতলার মৃত হারুনুর রশিদের স্ত্রী জাহানারা রশিদ।  

দুদক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দুই একর ৩৮ শতাংশ জমি অবৈধভাবে বিক্রির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ সরকারের আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

মামলার নথির বরাত দিয়ে আমিনুল বলেন, আদমদীঘিতে বাংলাদেশ জুট কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠান ‘সুরুজ মল আগরওয়ালা’র (বর্তমানে বিলুপ্ত) জায়গা জাহানারা রশিদের কাছে ২০১০ সালের ১৩ মে ইজারা দেওয়া হয় তিন বছরের জন্য।

“ইজারার শর্ত অনুযায়ী পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়কে প্রতিবছর এক লাখ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা। কিন্ত প্রতিবছরের ওই ভাড়া একবারও পরিশোধ না করে জাহানারা জমিটি ক্রয়ের জন্য পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে ২০১১ সালে ২৩ নভেম্বর আবেদন করেন।”

তিনি বলেন, এ ধরনের সম্পত্তি স্থায়ীভাবে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য উম্মুক্ত দরপত্র আহ্বানের নিয়ম থাকলেও মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী একক সিদ্ধান্তে ৬৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৫ টাকার সম্পত্তি মাত্র ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৭৪ টাকায় বিক্রি করেন। এতে সরকারের ৪০ লাখ ৬৯ হাজার ২১ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতির এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছিলেন, “আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাত দুটোর ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীর যতটা বিরোধী, তার চেয়ে বেশি হজ আর তাবলিগের বিরোধী।

“হজে কত ম্যানপাওয়ার নষ্ট হয়। এরা কোনো প্রডাকশন দিচ্ছে না... শুধু খাচ্ছে, দেশের টাকা ওদের দিয়ে আসছে।”

সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জয় বাংলাদেশ সরকারের কেউ নন। সিদ্ধান্ত নেওয়ারও তিনি কেউ নন।

এরপর তাকে দলের সভাপতিমণ্ডলীর পদ ও মন্ত্রীত্ব থেকে অবসর দেওয়া হয় এবং দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

টাঙ্গাইল-৪ আসনে চার বারের সংসদ সদস্য লতিফ সিদ্দিকী ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার সরকারে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে পাঁচ বছর তা পালন করেন। 

২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ পের সরকার গঠন করলে তিনি দুই মন্ত্রণালয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির দায়িত্ব পান।  কিন্তু তা পালনের এক বছর না পেরোতেই বিদায় নিতে হল তাকে।