যবিপ্রবি ছাত্রলীগ সম্পাদকসহ ৭ নেতা বহিষ্কার

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকসহ সাত নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2017, 02:34 PM
Updated : 7 Oct 2017, 02:45 PM

একই সঙ্গে ঘটনাটি তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, শনিবার উপাচার্য মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে রিজেন্ট বোর্ডের জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বহিষ্কৃতরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির শিক্ষার্থী এস এম শামীম হাসান, একই বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের শহীদ মসিউর রহমান হল শাখা সভাপতি বিপ্লব কুমার দে শান্ত, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী ও একই বিভাগের ছাত্রলীগ সহসভাপতি তানভির ফয়সাল, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্র্থী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. আল মামুন সিমন, ক্রীড়া সম্পাদক মাসুদুর রহমান রনি, পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক তানভির আহমেদ তানিন ও একই বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিক খন্দকার।  

স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ডিন নাসিম রেজাকের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব সহকারী পরিচালক (পরিবেশ ও উন্নয়ন) আবদুর রউফ, সদস্যরা হলেন শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের প্রভোস্ট মো. আনিছুর রহমান, রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য মো. ওমর ফারুক ও বিএনসিসির পরিচালক প্রভাস চন্দ্র রায়।

হামলার সময় কয়েকটি কক্ষে ভাংচুর চালানো হয়

কমিটিকে আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরই জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেবে বলে জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান।

বৃহস্পতিবার রাতে শহীদ মসিউর রহমান হলে প্রতিপক্ষ গ্রুপের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতিসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।

এ হামলার জন্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির শিক্ষার্থী এস এম শামীম হাসান অনুসারীদের দায়ী করছেন সভাপতি সভাপতি সুব্রত বিশ্বাসের অনুসারীরা।

জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০১৪ সালে ছাত্রলীগকর্মী রিয়াদ হত্যার ঘটনায় সুব্রত বিশ্বাস ও শামীমকে বহিষ্কার করা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়। 

রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ শেখ আবুল হোসেন, যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম, যবিপ্রবির জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন মো. ইকবাল কবীর জাহিদ, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এ এস এম মুজাহিদুল হক, ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন মো. ওমর ফারুক, যশোর সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ আবু তোরাব মোহাম্মদ হাসান, যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার মো. আহসান হাবীব প্রমুখ।

সভা শুরু আগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সুব্রত বিশ্বাসের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন।

সেখানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, “এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন এবং দুঃখজনক। এটা মানা যায় না।”

তিনি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপানের আশ্বাস দেন।

এদিকে একই দিন দুপুর ১টার দিকে প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলন করেন বহিষ্কৃত নেতা এস এম শামীম হাসান। এ সময় শামীমের পক্ষের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে শামীম বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার ইন্ধনে অস্থির হয়ে উঠেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। একের পর এক হামলা ভাংচুর লুটপাট ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটে চলেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রলীগ সভাপতি অনুসারী সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপ করে বলে শামীমের অভিযোগ।