শিশু ‘অপহরণ ও পাচারকারী চক্রের হোতা’ আটক

রাজধানীর গুলিস্তান থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, যাকে শিশু অপহরণ ও পাচাকারী চক্রের হোতা বলে দাবি করছে র‌্যাব।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2017, 03:00 PM
Updated : 5 Oct 2017, 03:01 PM

সাহাবুদ্দিন ওরফে সেলিম ওরফে সাহেদকে (৪৫) বুধবার রাতে আটক করা হয় বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র‌্যাব-১১ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কামরুল হাসান এ তথ্য জানান।

কর্নেল কামরুল বলেন, ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের বন্দর থেকে অপহরণ করা হয় আট বছরের শিশু বায়েজীদকে। পরে  অপহরণকারীরা বায়েজীদের মাকে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে শিশুটিকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় তারা। তখন বায়েজিদের পরিবার বিষয়টি র‌্যাবকে জানায়।

তিনি জানান, র‌্যাব চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে এবং অপহরণের সঙ্গে জড়িত ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে।

এরা হলেন জাকির হোসেন, তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম, বানেছা, টিটু,  মোহাম্মদ হোসেন সাগর, জেসমিন বেগম ও আসলাম।

কামরুল বলেন, “আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে ১৭ শিশুকে অপহরণ করে তাদের মধ্যে নয় জনকে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেয় বলে স্বীকার করেছেন।”

এছাড়া কয়েকজনকে বিদেশে পাচার করেছে এবং মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ দেওয়ার করার কারণে দুইজন শিশু মারা যায়, যাদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয় বলে তারা স্বীকারোক্তিতে র‌্যাবকে বলেছেন।

সহযোগীরা সাহাবুদ্দিন ওরফে সাহেদ এই অপহরণকারী দলের নেতা বলে জানিয়েছেন, বলেন কর্নেল কামরুল। 

জিজ্ঞাসাবাদে সাহাবুদ্দিনের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে কর্নেল কামরুল হাসান আরও জানান, “সাহাবুদ্দিন একজন পেশাদার শিশু অপহরণকারী। সে এক সময় টেম্পু ও ট্রাক চালাত।

“১৯৯৯ সালে বন্দরে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়। ২০০৬ সালে নাম পরিবর্তন করে সেলিম ছদ্ম নামে পার্সপোট করে সৌদি আবর চলে যায়।”

কামরুল জানান, ২৭ দিন পর সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে ফতুল্লায় একটি সিমেন্ট কোম্পানিতে চালক পদে চাকরি নেয়। সেখানে ৪শ ব্যাগ সিমেন্ট আত্মসাতের অভিযোগে ফতুল্লা থানায় মামলা হলে সে আত্মপোন করে চাদঁপুরে চলে যায়। পরে ঢাকায় এসে ট্যাক্সি চালানোর পাশপাশি শিশু অপহণ  ও পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।

এই সংঘবদ্ধ চক্রের অন্যান্য সদস্য জাকির, টিটু, জেসমিন, বানেছা, বেলু ও আসলামদে সঙ্গে সাহাবুদ্দিন ঢাকার সদরঘাট, কমলাপুর, যাত্রাবাড়ি, নারায়ণগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকা থেকে শিশু অপহরণ করত বলেও তিনি স্বীকার করেছেন বরে কর্নেল কামরুল জানান।

সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় অস্ত্র ও ডাকাতি এবং ফতুল্লা থানায় ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে বলে জানান সাহাবুদ্দিন নিজে।

সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।