বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঈশ্বরদী ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সুবক্তা হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির এই নেতা সোমবার সকালে ঢাকার পান্থপথে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে তার মরদেহ শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আনার পর মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
এরপর উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠনে নেতাকর্মীরা একে একে প্রয়াত জসিম মণ্ডলের কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
৯৫ বছর বয়সী জসিম মণ্ডল বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর পাবনার ঈশ্বরদীতে নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনা হয়েছিল।
বুধবার সকালে পাবনার ঈশ্বরদীতে নিজ বাড়িতে আনা হয়। এরপর তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ভীড় করেন রাজনৈতিক সহকর্মী ও ভক্ত অনুরাগীরা।
জানাজার পর পাবনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের এই সংগঠককে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
জসিম মণ্ডল বাংলাদেশ রেল শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহসভাপতি ছিলেন। ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রেরও উপদেষ্টা।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতা জসিম উদ্দিন মণ্ডলের জন্ম ১৯২২ সালে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায়। ছেলেবেলাতেই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি।
১৯৪০ সালে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন স্বশিক্ষিত জসীম মণ্ডল। দেশভাগের পর পাবনার ঈশ্বরদীতে চলে আসে তার পরিবার। সেখানে রেল শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি।
রেল শ্রমিক ইউনিয়নে যুক্ত হওয়ার সুবাদে ভারতের কমিউনিস্ট নেতা জ্যোতি বসুর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ ঘটেছিল জসীম মণ্ডলের।
এরপর ১৯৫৪ সালে মুক্তি পাওয়ার কিছুদিন পর আবার নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয় জসিম মণ্ডলকে। এসময় রাজশাহী জেলে কিছুদিন থাকার পর তাকে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে বদলি করা হল। ১৯৫৬ সালে তিনি মুক্তি লাভ করেন। ১৯৬২ সালের দিকে আবার গ্রেপ্তার হন এবং ১৯৬৪ সালে মুক্তি পান।
একাত্তরে ভারতে থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ভূমিকা রাখেন জসিম মণ্ডল।