ভুয়া মণ্ডপ দেখিয়ে চাল আত্মসাতের অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ভুয়া পূজামণ্ডপ দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2017, 12:15 PM
Updated : 3 Oct 2017, 12:16 PM

উপজেলার রাতইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বি এম হারুন অর রশিদ পিনুর বিরুদ্ধে দুইটি মণ্ডপের নাম ব্যবহার করে সরকারি বরাদ্দের চাল উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন ওই মণ্ডপ কমিটির সভাপতিরা।

এর সঙ্গে ইউপি সদস্যরাও জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

পিনু আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে ২০১৬ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

মন্দির কমিটি জানায়, উপজেলার রাতইল ইউনিয়নের তারাইল মাঝিবাড়ী দুর্গা মন্দির ও পরানপুর ঋষিবাড়ী দুর্গা মন্দিরে এ বছর দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়নি। কিন্তু চেয়ারম্যান পিনু মন্দির দুটির নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে সরকারি বরাদ্দের এক মেট্রিক টন চাল আত্মসাৎ করেন। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সদস্যের যোগসাজসে ওই চাল উত্তোলন করে স্থানীয় চাল ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন।

পরানপুর ঋষিপাড়া দুর্গা মন্দিরের সভাপতি অশোক বিশ্বাস বলেন, “চেয়ারম্যানকে বলেছিলাম, ‘এবার আমাদের বাড়িতে পূজা হচ্ছে না। চাল উত্তোলন করব না’। কিন্তু চেয়ারম্যান জোর করে আমাকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে নিয়ে গিয়ে ডিও লেটারে সই নেন।

“পরে চেয়ারম্যান চাল উত্তোলনের পরে বিক্রি করে টাকা নিয়েছেন।”

মাঝিবাড়ী দুর্গা মন্দিরের সভাপতি সমীর বিশ্বাস বলেন, “আমি লেখাপড়া জানি না। এবার দুর্গা পূজার আয়োজন করিনি। আমাদের ওয়ার্ডের রেজাউল মেম্বার মন্দির সংস্কারের জন্য অনুদান এনে দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড নেয়।

“পরে আমাকে কাশিয়ানী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে নিয়ে গিয়ে কাগজে সই দিতে বললে আমি সই দেই। পরে জানতে পারি তারা মন্দিরের নামে বরাদ্দকৃত চাল উত্তোলন করেছে।”

চেয়ারম্যান বিএম হারুন অর রশিদ পিনু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “মন্দির কমিটির সভাপতি-সম্পাদক সরকারি বরাদ্দের চাল উত্তোলন করেছে। আমি শুধু তাদের ছবি ও আইডি কার্ড সত্যায়িত করে দিয়েছি।”

ভুয়া মন্দিরের নামে কোনো বরাদ্দ করেননি দাবি করে তাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য প্রতিপক্ষ মিথ্যা অভিযোগ করছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।

কাশিয়ানী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চলতি বছর শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে কাশিয়ানী উপজেলার ২৩৮টি মন্দিরে ১১৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মাঈনউদ্দিন বলেন, “এ ধরনের কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”