পাঁচ গুণ লোক তুলে ‘রোহিঙ্গাদের মালপত্র ফেলে দেন মাঝি’

মিয়ানমারের আকিয়াব থেকে পালিয়ে আসার পথে ইনানী সৈকতে নৌকাডুবির ঘটনায় পরিবারের আট সদস্যকে হারানো এক রোহিঙ্গার কথায় উঠে এসেছে, কীভাবে মাঝির লোভের শিকার হয়েছেন তারা।

কক্সবাজার প্রতিনিধিশংকর বড়ুয়া রুমি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2017, 07:57 AM
Updated : 29 Sept 2017, 10:00 AM

আব্দুস সালাম নামের ৩৫ বয়সী ওই ব্যক্তি বলেছেন, ১৪ জনকে নিয়ে আসার চুক্তি করে ওই নৌকার মাঝি বিভিন্ন জায়গা থেকে তুলেছিলেন ৮০ জনকে। পরে ভার কমাতে যাত্রীদের শেষ সম্বল সাগরে ফেলে দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি।

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় ইনানী সৈকতের পাথুয়ারটেক এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকালে নৌকাডুবির ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে আরও ২৭ জনকে।

আব্দুস সালাম যাত্রী সংখ্যার যে হিসাব দিয়েছেন, তাতে আরও ৩৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। নৌকাডুবিতে তার স্ত্রী, এক ছেলে, মা, ভাইয়ের স্ত্রী, সন্তান ও বোনসহ আটজনের মৃত্যু হয়েছে।

মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার বুচিডং থানার মইডং গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম পেশায় ছিলেন দিনমজুর। গত সোমবার থেকে তাদের গ্রামে সেনাবাহিনীর হামলা শুরুর পর পরিবার নিয়ে পালিয়ে পাহাড়ে আশ্রয় নেন তিনি।

“তিন দিন ধরে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা পার হয়ে বুধবার রাত ৯টার দিকে আমরা নৌকায় উঠি। মাঝির সঙ্গে কথা ছিল, আমাদের দুই পরিববারের ১৪ জনকে নিয়ে আসবে। কিন্তু বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ৬৬ জন যাত্রী তোলে সে।”

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নৌকাডুবির ঘটনায় আহত রোহিঙ্গাদের সেবা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা

সালাম বলেন, নৌকা নিয়ে বাংলাদেশে আসার পথে ভার কমানোর জন্য তাদের মালপত্রভর্তি বস্তাগুলো সাগরে ফেলে দেন নৌকার মাঝি।

বৃহস্পতিবার বিকালে তাদের নৌকা ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে। এ অবস্থার মধ্যে মাঝি দিক হারিয়ে ফেলেন এবং এক পর্যায়ে নৌকা উল্টে যায়।

উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কায় কিসলু দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া রোহিঙ্গাদের বরাত দিয়ে জানান, নৌকাডুবির সময় সাগরে দমকা হাওয়াসহ ভাটার টান ছিল।

“নৌকায় শিশুসহ ৮০ জন যাত্রী ছিল বলে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা জানিয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ জনের লাশ পাওয়া গেছে। নিখোঁজদের ব্যাপারে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।”

সাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের নজরদারি রয়েছে বলেও জানান তিনি।