রাবি শিক্ষিকার ‘আত্মহত্যা’: অভিযোগপত্রে ‘মনগড়া তথ্য’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষিকা আকতার জাহান জলি ‘আত্মহত্যা’ প্ররোচনা মামলার অভিযোগপত্রে ‘মনগড়া’ তথ্য দেওয়া হয়েছে বলছেন তার সহকর্মীরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2017, 01:28 PM
Updated : 21 Sept 2017, 01:28 PM

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন বিভাগের সভাপতি প্রদীপ কুমার পাণ্ডে।

তিনি বলেন, “অভিযোগপত্রে আমাদের সাত শিক্ষকের নামে ১৬১ ধারায় যে জবানবন্দি দাখিল করা হয়েছে তা সত্য নয়। নানা রকম বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। বন্তুত আমরা কেউ কোনো জবানবন্দি দেইনি।

“পুলিশ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের কারও কারও সঙ্গে কথা বলেছে, আবার কারও সঙ্গে একেবারেই কথা বলেনি। আমরা পুলিশের কাছে বলিনি বা দাবি করিনি এমন অনেক মনগড়া তথ্য দিয়ে এ জবানবন্দি সাজানো হয়েছে।”

বিভাগীয় বিষয়ে প্রত্যক্ষ যেসব অভিজ্ঞতার কথা সর্বসম্মতভাবে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে তা পাশ কাটিয়েই নয় উল্টোভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিভাগীয় প্রধান।

প্রদীপ পাণ্ডে বলেন, “এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের দিকে নজর না দিয়ে বরং আমাদের সহকর্মীদের অসম্মানিত ও হেয় প্রতিপন্ন করেছে। তাই আমরা এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রচেষ্টার নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে পুলিশি অনুসন্ধানে প্রাপ্ত প্রকৃত সত্য উপস্থাপনের দাবি জানাই।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল্লাহ আল-মামুন, সহকারী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার, মাহাবুবুর রহমান, আমেনা খাতুন, সহযোগী অধ্যাপক মশিহুর রহমান, এবিএম সাইফুল ইসলাম প্রভাষক আব্দল্লাহীল বাকীসহ শতাধিক শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা মতিহার থানার উপ-পরিদর্শক ব্রজগোপাল কর্মকার বলেন, তদন্ত করে আক্তার জাহানের সহকর্মী আতিকুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। তাদের দীর্ঘদিনের মোবাইলের মেসেজ, কল লিস্ট ঘাঁটাঘাঁটি করে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। তারই ভিত্তিতে অভিযোগপত্র গঠন করা হয়েছে।

“বিভাগের সাতজন শিক্ষকের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সেগুলো অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে যা উল্লেখ করা হয়েছে সেটাই শেষ কথা নয়। সাক্ষীরা আদালতে যা সাক্ষ্য দিবেন সেটাই রেকর্ড করা হবে।”

এর আগে দুপুর ১২টায় বিভাগের ১২৩ নম্বর কক্ষে আকতার জাহানর স্মরণে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাকে স্মরণ করে বক্তব্য দেন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

এদিকে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র ভবনের সামনে আক্তার জাহানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে নিজের আবাসিক কক্ষ থেকে সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহান জলির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে জলির ছোট ভাই কামরুল হাসান বাদী হয়ে মতিহার থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।

গত ২৫ অগাস্ট ওই মামলায় আক্তার জাহানের সহকর্মী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতিকুর রহমান রাজাকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।