৬৫ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি উপহার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে বাড়ি পেয়েছে গোপালগঞ্জের ভূমিহীন ও অসচ্ছল ৬৫ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2017, 07:38 AM
Updated : 15 Sept 2017, 07:52 AM

সরেজমিনে কয়েকটি বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে, ‘বীর নিবাস’ নামে একতলা এসব বাড়িতে রয়েছে দুটি বেডরুম, একটি রান্নাঘর, একটি বাথরুম ও বারান্দা। সেই সঙ্গে গৃহপালিত পশুর জন্য আছে আলাদা একটি ঘর।

গোপালগঞ্জের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে ফজলুল হক বলেন, এ জেলায় ৭৪ জন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকে বাসস্থান করে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ৬৫টি বাসস্থান নির্মাণ শেষে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা বসবাস করছেন। বাকি নয়টি বাসস্থানের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হচ্ছে।

কাজ শেষে সেগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ৫০০ স্কয়ার ফুটের এসব স্থাপনা ‘ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্প’ নামে ৬ কোটি ২৭ লাখ ৯০ হাজার টাকায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা কাজী সামসুল আলমের স্ত্রী রাজিয়া বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার স্বামী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেন। তিনি ২১ বছর আগে মারা গেছেন। আমি অসচ্ছলভাবে জীনযাপন করছিলাম। বসবাসের ভালো ঘর ছিল না।

“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে পাকা দালানের বাসস্থান উপহার দিয়েছেন। গরুর গোয়াল করে দিয়েছেন। সম্মানী ভাতা দিচ্ছেন। এছাড়া সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আমাদের দুঃখকষ্ট লাঘব করেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমি তার সুস্বাস্থ্য, সাফল্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। তিনি যাতে আবার ক্ষমতায় আসতে পারেন, সেজন্য আল্লাহর দরবারে চোখের জলে দোয়া মোনাজাত করি।”

গোপালগঞ্জ শহরতলির ইসলামপাড়ার শেখ আসাদুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে শহীদ হন। তার ছোট মেয়ে মালেকা পারভীন বলেন, “আমরা তিন বোন। ভাই নেই।

“আমার বিধবা মা নুরুন্নাহার বেগম অনেক কষ্ট করে আমাদের বড় করেছেন। তিনি অসচ্ছল ও অসহায়। প্রধানমন্ত্রী আমার মায়ের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। মা প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় শেষ বয়সে শান্তিতে জীবন কাটাচ্ছেন। এতে আমরা খুব খুশি। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”

জেলা শহরের বেদগ্রাম এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মো. খাদেমুল ইসলাম ডালিমও সন্তুষ্টিসহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

“বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা ছিলাম সবচেয়ে অবহেলিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে আমদের মূল্যায়ন করেছেন। তিনি আমার জন্য বাসস্থানসহ সবকিছু করেছেন। এখন আমি পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করছি। আমাদের জীবন উন্নত ও সমৃদ্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই।”

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের একমাত্র অভিভাবক।  তার কাছে আমাদের  কিছু চাওয়া লাগে না। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কল্যাণকর কাজ করে যাচ্ছেন। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য পাকা বাসস্থান করে দিয়েছেন।

“এতে মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এছাড়া তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ফ্লাটবাড়ি করে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বের বুকে অচিরেই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই।”

সারাদেশের তিন হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর।