রংপুরে খাদেম হত্যা: ‘অটোরিকশা চালাতেন’ ৩ আসামি

রংপুরে মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে তিনজন একটি ভাড়া বাড়িতে থেকে অটোরিকশা চালাতেন বলে সাক্ষ্যে উঠে এসেছে।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2017, 01:22 PM
Updated : 13 Sept 2017, 01:23 PM

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা জানান, বুধবার রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকারের আদালতে এ মামলায় পাঁচজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তাদের মধ্যে কয়েকজনের সাক্ষ্যে এ তথ্য পাওয়া যায়। 

তিনি বলেন, এ হত্যা মামলার তিন আসামি খাদেমকে হত্যার ছয়মাস আগে থেকে রংপুর নগরীর নুরপুর এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজের বাসায় ভাড়া থাকতেন। 

“আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় বাড়িওয়ালা আজিজ কাঠগড়ায় থাকা আসামি ইসাহাক আলী, লিটন মিয়া ও সাখাওয়াত হোসেন ওরফে রাহুলকে শনাক্ত করেন।

“তারা আদালতকে জানান-২০১৫ সালের ২৬ মে এ তিনজন আজিজের বাসা ভাড়া নেন। সকালের তারা বের হয়ে যেতেন, ফিরতেন রাতে।”   

ওই বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তারা বাড়ি ছেড়ে চলে যান। পরে পুলিশ তার বাড়িতে তদন্ত করতে গেলে তিনি খাদেম হত্যার বিষয়টি জানতে পারেন বলে সাক্ষ্যে উল্লেখ করেন, বলেন রথীশ। 

আরেক সাক্ষী নুরপুর এলাকার অটোরিকশা গ্যরেজের মালিক আব্দুল জলিলও ওই তিন আসামিকে শনাক্ত করে আদালতকে বলেন, ইসাহাক, লিটন ও সাখাওয়াত পালা করে একটি অটোরিকশা চালাতেন। সেটি চার্জ দেওয়ার জন্য তার গ্যারেজে রাখতেন। 

“ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তিনজনই অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। পরে পুলিশের কাছ থেকে জানতে পারি তারা মাজারের খাদেম হত্যার সঙ্গে জড়িত।” 

আজিজ ও জলিল ছাড়াও সাক্ষ্য দেন মামলার প্রধান আসামির বাড়ির এলাকার  বাসিন্দা জামসেদ আলী, মতিয়ার রহমান ও আল ইমরান।

সাক্ষ্য শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন বলে আইনজীবী রথীশ জানান।

এ নিয়ে এ মামলায় ৫১ জন সাক্ষীর মধ্যে মামলার বাদী খাদেমের ছেলে অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলামসহ ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় ১২ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা নয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়।

পাঁচজন সাক্ষির জেরা শেষে আদালত আগামী ১৮-২০ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ঠিক করে দেন। এ তিনদিন ছয়জন করে মোট ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে আইনজীবী রথীশ জানিয়েছেন।

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের চৈতার মোড়ে মাজার শরীফের খাদেম রহমত আলীকে (৬০) গত ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর রাতে বাড়ি ফেরার সময় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ছেলে শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামুন অর রশীদ গত বছরের ৩ জুলাই জেএমবির রংপুর আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মামুন ওরফে মন্ত্রীসহ ১৪ জেএমবির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

দুই আসামির মৃত্যু হওয়ায় তাদরে বাদ দিয়ে গত ১৬ অগাস্ট রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকার জেএমবির ১২ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।