‘পুলিশের ধাওয়ায়’ জুয়ারির মৃত্যু

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় এক জুয়ারির মৃত্যু হয়েছে, যাকে পুলিশ ধাওয়া করেছিল বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Sept 2017, 01:12 PM
Updated : 12 Sept 2017, 01:12 PM

সোমবার গভীর রাতে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের গোলাবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত আব্দুর সবুর (৪৪) উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের গোলাবাড়ি ভেলু শেখের ছেলে।

এছাড়া রৌমারী থানার পুলিশ পাঁচ জুয়াড়িকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

তবে পুলিশের ধাওয়ায় মৃত্যু এবং জুয়ার আস থেকে আটকের কথা পুলিশ অস্বীকার করেছে।

মৃত সবুরের ভাই নুর হোসেন বলেন, সোমবার রাত ২টার দিকে গোলাবাড়ির মাহবুবুর রহমান রিপনের বাড়িতে ১০/১২ জনের একটি দল তাস খেলছিল।

“এ সময় গোপন সংবাদে রৌমারী থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় পাঁচ জনকে আটক করে পুলিশ।”

তিনি বলেন, গোলাবাড়ি গ্রামের মৃত আইজুদ্দনের ছেলে মুঞ্জিল হোসেন (৪৮), ধনারচর আকন্দপাড়া  গ্রামের মৃত কসব উদ্দিনের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম (৩৫), কাশিয়াবাড়ি গ্রামের আজিজল হক মন্ডলের ছেলে মোবারক হোসেন (৪৮), কোমরভাঙ্গি নয়াপাড়া গ্রামের ময়দান আলীর ছেলে আমজাদ হোসেন (৩৩) ও কর্ত্তিমারী বাজারের প্যারিস টেইলার্সের মালিক গোলাপ হোসেনকে (৪৫) পুলিশ আটক করেছে।

“অন্যদেরকে ধাওয়া করলে তারা দৌড়ে পালায়। এ সময় পালাতে গিয়ে সবুর বাড়িতে (ঘটনাস্থলের কাছাকাছি) গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পানি পানি বলে চিৎকার করে আকস্মিকভাবে মৃত্যু হয় তার।”

থানা থেকে ছাড়া পেয়েছেন বলে দাবি করছেন ‘জুয়াড়ি’ আমজাদ হোসেন।

একজন নেতার মধ্যস্থতায় ছাড়া পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আব্দুর সবুর ও তার ছোট ভাই নুর হোসেনসহ ১২ জন মিলে ওই বাড়িতে তাস খেলছিলাম। প্রতিরাতে ওই বাড়িতে খেলা হলেও ওইদিন হঠাৎ হানা দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশ পাঁচ জনকে আটক করে। আব্দুর সবুরসহ অন্যরা পালিয়ে যান। আমরা ধরা পড়লেও ভোরে থানা থেকে ছাড়া পাই।”

ঘটনাস্থল থেকে একশ গজ দূরে রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের বাড়ি।

তিনি বলেন, পুলিশি অভিযানের পর সবুরের মৃত্যু হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। অবশ্য পুলিশ পরে আটক পাঁচ জুয়াড়িকে ছেড়ে দেয়। 

রৌমারী থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমাদের অভিযান চালানোর আগেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এছাড়া কোনো জুয়াড়িকে পুলিশ আটক করেনি।”

তবে পৃথক কয়েকটি অভিযান চালিয়ে রৌমারী থানা পুলিশ ৮০ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা ও ১১টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ চার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, এছাড়া একজন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার বাইরে যা শুনছেন তা গুজব। আর মৃত্যুর ঘটনায় একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।

এ ব্যঅপারে সাংসদ রুহুল আমিন বলেন, “পুলিশের অভিযানে একজনের মৃত্যু ও পাঁচ জুয়াড়িকে আটকের ঘটনা জানার পর সংশ্লিষ্ট সকলকে ফোন করেছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।”

মঙ্গলবার বিকালে কর্ত্তিমারী কেন্দ্রীয় কবর স্থানে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয় বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।