নড়িয়ায় লঞ্চ ডুবে নিখোঁজ ১২, তদন্ত কমিটি

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়ে তিন লঞ্চডুবিতে অন্তত ১২ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Sept 2017, 03:09 AM
Updated : 11 Sept 2017, 03:37 PM

নড়িয়া থানার এসআই হাবিবুর রহমান জানান, সোমবার ভোরে নড়িয়ায় ওয়াপদা ঘাটে এ লঞ্চডুবিতে নিখোঁজ কাউকে উদ্ধার করা যায়নি।

তিনি বলেন, “আমরা ১২ জন নিখোঁজের তালিকা করেছি। নৌ বাহিনীর ডুবুরী দল এখনও কোনো লঞ্চ বা নিখোঁজদের উদ্ধার করতে পারেনি।”

পুলিশের তালিকায় নিখোঁজরা হলেন, রবিন সরদার (২০), লিটন শেখ (২৫), মানিক মাদবর (৩৫), বশির (২৯), মো. রফিক (৫০), পলাশ (২০), সজল (২৫), জাকির (৪৫), শাহ আলম (৩৫), সালাউদ্দিন (৩০), জয় (১৯) ও সাদেক (২৫)।

তবে স্থানীয় ও লঞ্চের স্টাফদের দাবি যাত্রী এবং স্টাফসহ অন্তত ২৫ জন নিখোঁজ হয়েছে।

এছাড়া লঞ্চডুবির সময় সাঁতরে পাড়ে ওঠার সময় অন্তত ২০ আহত হয়েছে।আহতদের মধ্যে সরোয়ার নামে একজনকে ঢাকায় এবং বাকিদের নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।

লঞ্চডুবির পর শরীয়পুরের সঙ্গে ছোট লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

আহত মোহাম্মদ আলী ও নুর ইসলাম জানান, রোববার রাতে সদর ঘাট থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চ এমভি মৌচাক-২ ও নারায়ণগঞ্জ থেকেআসা এমভি নড়িয়া-২ ও মহানগর লঞ্চ ভোর ৪টায় ওয়াপদা ঘাটে পৌঁছে। অন্ধকার থাকায় কিছু যাত্রী লঞ্চে থেকে যায়।

পরে লঞ্চ ঘাটের পাশে একটি বাঁশ ঝাড়ের সঙ্গে নোঙর করে লঞ্চে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীসহ স্টাফরা ঘুমিয়ে পড়ে। ভোর ৫টার দিকে তীব্র স্রোতে বাঁশঝাড়সহ পাড় ধসে লঞ্চ তিনটি ডুবে যায় বলে জানান তারা।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, নদীর তীব্র স্রোত ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নোঙর করা তিনটি লঞ্চ ডুবে গেছে। উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় বিকাল ৫ টায় ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছে।

শরীয়তপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আ. রহমান বলেন, ইতোমধ্যে ঢাকা ও মাওয়া থেকে দুটি ডুবুরী দল ও শরীয়তপুরের ডুবুরীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার কাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

ডুবে যাওয়া লঞ্চের স্টাফ সরোয়ার হোসেন বলেন, লঞ্চ ৩টি ডুবে প্রায় ২৫ যাত্রী ও স্টাফ নিখোঁজ হয়েছে। তিনিসহ ২৫/৩০জন লোক সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন।

লঞ্চ যাত্রী লোনসিং গ্রামের মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমার স্ত্রী পারভিন, পাঁচ মাসের বাচ্চা, শাশুড়ি নিখোঁজ রয়েছে। আমি সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও তাদের বাঁচাতে পারিনি।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিক কাজী বলেন, তিনটি লঞ্চ প্রায় ৫০ জন লোক নিয়ে ভোরে ডুবে যায়।

এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) মিজানুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের  তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবা আকতার।