মেয়েটির স্বজন ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত রোববার মেয়েটিকে (১৪) ধর্ষণ করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক।
পরদিন সোমবার বাড়ির পাশে মেয়েটির ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে রোববার বিকালে নেত্রকোণা শহরে পৌরসভার সামনের সড়কে মানববন্ধন করেছে ‘নাগরিক সমাজ, নেত্রকোনা’।
মাববন্ধনে বক্তরা অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে উদীচী, মহিলা পরিষদ, ঠাকুরাকোনার সচেতন নাগরিক সমাজ, জেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, স্বাবলম্বী, নারীপ্রগতিসহ শহরের অন্তত ১৫টি সংগঠন অংশ নেয়।
নানা শ্রেণি-পেশার লোকজনের সঙ্গে মেয়েটির মা-বাবাও মানববন্ধনে অংশ নেন।
দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মেয়েটির মা, বাবাসহ ঠাকুরাকোনা রহিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ, সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমান, জেলা সিপিবি সভাপতি মোস্তফা কামাল, জেলা মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাহেজা বেগম, উদীচীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান খান, স্বাবলম্বীর ব্যবস্থাপক কোহিনুর বেগম প্রমুখ।
তিনি বলেন, ঘরে এসে তার মেয়ে ওই তিন যুবক তাকে ধর্ষণ করেছে বলে জানান। কিছুক্ষণ পর ‘ধর্ষণকারী’ যুবকদের একজন তাদের ঘরে এসে ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। কিন্তু স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জেনে ফেলে।
পরদিন (সোমবার) বেলা ১১টার দিকে পাশের ঘরের আড়ার সঙ্গে মেয়েটির ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
মেয়েটির বাবা বলেন, গত বুধবার তিনি থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে আগে পুলিশের করা অপমৃত্যুর মামলাটিই চলবে বলে জানায়।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি আমীর তৈমুর ইলী বলেন, “মেয়েটি গলায় দড়ি দিয়ে মারা গেছে। কোনো রেপ টেপ হয়নি। প্রেম সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অভিমানে মরেছে।”
এদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়র হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে ওইদিন তার পরা পোশাকসহ কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে।
এসপি জয়দেব চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। মেয়েটির মাকে বলা হয়েছে তিনি চাইলে আইন অনুযায়ী আবার মামলাও করতে পারেন। আদালতের কাছে আবেদন করে পুনরায় ময়নাতদন্তও করা যাবে।”
এসপি আরও বলেন, এ ঘটনা তদন্তের দয়িত্বে থানা মডেল থানার এসআই মোশতাক আহম্মেদকে বদলে পরিদর্শক (তদন্ত) শাহে নুর আলমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মানববন্ধনে জেলা সিপিবি সভাপতি মোস্তফা কামাল বলেন, ধর্ষণকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
আটদিনেও ধর্ষণ মামলা না নেওয়ায় তিনি পুলিশের ভূমিকার নিন্দা জানান।