‘ম্যাজিক বক্সে টাকা রাখলে দ্বিগুণ’ বলে ধোঁকা, গ্রেপ্তার ৬

ঢাকার বারিধারার এক পোশাক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা একটি ম্যাজিক বক্সের মাধ্যমে প্রতারণা করেছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Sept 2017, 06:14 AM
Updated : 9 Sept 2017, 06:14 AM

নারায়ণগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চাঁদপুরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন - চাঁদপুরের ইমামপুর গ্রামের মফিজুল ইসলাম শান্ত, গাজীপুরের সাতখামাইর এলাকার এমদাদুল হক আকন্দ ও তার ভাই কামরুজ্জামান আকন্দ, কিশোরগঞ্জের বাগপাড়ার মেজবাহ উদ্দিন খাঁ শাফি, আমিরুল খাঁ ও মজিবর খাঁ।

তাদের কাছ থেকে ২৬ হাজার টাকার সমপরিমাণ মার্কিন ডলার, তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা, কয়েকটি মোবাইল ফোন, পাসপোর্ট, বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের জমা রসিদ ও চেকবই উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ওসি মাহবুবুর।

তিনি বলেন, “গত ১৩ মার্চ একটি প্রতারক চক্রের সঙ্গে পরিচয় হয় ঢাকার বারিধারার সুপ্তি গার্মেন্টের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মামুনের। তারা দাবি করে, ‘তাদের কাছে একটি ম্যাজিক বক্স আছে। তাতে টাকা রাখলে দ্বিগুণ হয়ে যায়।’

“মামুন প্রতারকদের ফাঁদে পা দেন। গত ২০ এপ্রিল প্রতারক মফিজুল ইসলাম শান্ত আড়াই লাখ টাকার সমপরিমাণ ডলারসহ মামুনকে নারায়ণগঞ্জের গ্রান্ড হল চাইনিজ রেস্টুরেন্টে যেতে বলেন। সেখানে খাওয়া-দাওয়ার পর প্রতারকরা ৫০ হাজার টাকার একটি বান্ডিলে কিছু একটা স্প্রে করে বক্সে রেখে বলে, ‘এটা ম্যাজিক বক্স। এখানে টাকা রাখলে দ্বিগুণ হয়ে যায়।’ পরে ওই বাক্স থেকে তারা এক লাখ টাকার একটি বান্ডিল বের করে দেয় মামুনকে।”

মামুন তাদের বিশ্বাস করে ২৯ জুলাই দুই কোটি এক লাখ টাকার সমপরিমাণ ডলার নিয়ে প্রতারক চক্রের সঙ্গে দেখা করেন বলে জানান ওসি মাহবুবুর।

“প্রতারকরা সব ডলার নিয়ে কৌশলে কক্স পরিবর্তন করে অন্য একটি বক্স রেখে বলে, ‘আপনার অ্যাকাউন্টে চার কোটি টাকা জমা হলে এই বক্সটি নিয়ে যাব।’ পরদিন ব্যবসায়ী মামুন বক্সটি খুলে দেখেন এর ভেতরে ছাই ভরা। আর প্রতারক চক্রের সব মোবাইল ফোন বন্ধ।”

ঘটনার প্রায় দুই মাস পর ৫ সেপ্টেম্বর মামুন ছয়জনকে আসামি করে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। পরে সেটা গোয়েন্দা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

ওসি মাহবুবুর বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যমোতাবেক টাকা ও ডলারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মফিজুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি অভিযোগ এসেছে। সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর আদালত তাদের তিন থেকে চার দিন করে পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছে।