মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের দেখতে বাংলাদেশে আসা ন্যাটো জোটভুক্ত ইউরোপের মুসলিম দেশটির প্রেসিডেন্টের স্ত্রী বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ের শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের একথা জানান।
এমিনে এরদোয়ান বলেন, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পাশে থাকবে তুরস্ক। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের অধিবেশন প্রস্তাব উত্থাপন করবেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
মিয়ানমারে সেনা অভিযানের মুখে গত মাসের শুরু থেকে রোহিঙ্গাদের স্রোত বইছে বাংলাদেশ পানে। ইতোমধ্যে দেড় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে বলে জাতিসংঘের হিসাব।
বাংলাদেশে দশকের পর দশক ধরে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছে। নতুন করে শরণার্থী নেওয়ার সমস্যার কথা বাংলাদেশ সরকার বলে আসছে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান তুর্কি ফার্স্ট লেডি। সেইসঙ্গে মিয়ানমার সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগের কথাও বলেন তিনি।
মুসলিম রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে আসছে তুরস্ক সরকার। গত মঙ্গলবার মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির সঙ্গে কথা বলার পর পরিস্থিতি দেখতে স্ত্রীকে বাংলাদেশে পাঠান এরদোয়ান।
ফার্স্ট লেডির সঙ্গে আসা তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মভেলুত ক্যাভুফোগলু বলেন, মিয়ানমারে যে নির্যাতনের কথা বলা হচ্ছে এটা বন্ধে আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করছে তার সরকার। রোহিঙ্গাদের সহযোগিতার পাশাপাশি এ সমস্যা সমাধানে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় নামার পর দুপুরে বিমানে কক্সবাজার পৌঁছেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি। তার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহররিয়ার আলম ছিলেন।
দুপুরে তারা কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালংয়ের শরণার্থী শিবিরে পৌঁছেন। সেখানে নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে স্বজনহারা ও আহত দের পাশাপাশি ক্যাম্পবাসীদের সঙ্গেও কথা বলেন এমিনে।
এসময় রোহিঙ্গা এক শিশুকে বুকে আঁকড়ে নিয়ে কেঁদে ফেলেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি; নির্যাতনের বর্ণনা দিতে রোহিঙ্গারাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এমিনের শরণার্থী শিবির পরিদর্শনকালে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা উপস্থিত ছিলেন।
বিকালে ঢাকায় ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি।