ঈদে ফাঁকা সিলেট, পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তা

নাড়ীর টানে গ্রামমুখী মানুষ। জনস্রোতের সিলেট নগর এখন পুরোই ফাঁকা। নেই যানজট, নেই কোলাহল।

মঞ্জুর আহমদ সিলেট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2017, 08:10 AM
Updated : 3 Sept 2017, 08:10 AM

ছিমছাম নীরব শহর স্থানীয় স্থায়ী বাসিন্দাদের খুশির কারণ হলেও ফাঁকা নগরীর নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা বলেন, ঈদে নগরী ফাঁকা হওয়ার সুযোগে চুরি-ছিনতাই-ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটে। তাই পুলিশ বাড়তি সতর্ক ব্যবস্থা নিয়েছে।

মূলত ঈদের দুই-তিন দিন আগে থেকেই সিলেট নগরে কর্মরত বাইরের বিভাগ কিংবা জেলার মানুষেরা নিজ আবাসভূমে ফিরতে শুরু করে। তখন থেকেই একটু একটু করে ফাঁকা হতে শুরু করে নগরী।

নিত্যদিনকার সেই মহাব্যস্ততার ছিঁটেফোটাও এখন নেই এই নগরীতে। শান্ত, নীরব এক নগর।

এই নীরবতায় নগরীর স্থায়ী বাসিন্দারা খুব খুশি। কোলাহলমুক্ত এমন নগরই চাওয়া তাদের।

সোবহানীঘাট এলাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “নগরীতে কোলাহল নেই, যানজট নেই, ভালোই লাগছে। তবে টেনশনে আছি, এ সময় চুরি-ডাকাতি বেড়ে যায়।’’

পুলিশ প্রশাসনও মনে করছে, ফাঁকা নগরীতে সক্রিয় হতে পারে অপরাধী চক্র। ঘটাতে পারে চুরি-ছিনতাই-ডাকাতির মতো যেকোনো ঘটনাও।

বিশেষ করে যারা বাসা-বাড়ি তালা মেরে নগরী ছেড়েছেন, তাদের ফাঁকা ঘর নিয়েই বেশি চিন্তত পুলিশ প্রশাসন। এছাড়া নীরব-ফাঁকা রাস্তায় ছিনতাইয়ের উপদ্রবও বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

ফেনীর বাসিন্দা আয়শা সুলতানা থাকেন সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায়। ঈদ উদযাপন করতে ঘরে তালা মেরে বাড়ি গেছেন। এর আগে এক ঈদে বাড়ি যাওয়ার পর তার বাসায় চুরি হয়েছিল।

আয়শা সুলতানা বলেন, “আগে একবার চুরি হওয়ায় কিছুটা আতঙ্কে আছি। তবে যাই হোক ঈদে তো বাড়ি যেতেই হবে।”

পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তা জেদান বলেন, যেকোনো ধরনের অপরাধ কর্ম রুখতে  তৎপর রয়েছে পুলিশ। সেজন্য পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। চেকপোস্ট বসানো হয়েছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে।

“নগরীর বিভিন্ন স্পটে ছদ্মবেশে ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ ও স্পেশাল ব্রাঞ্চ তাদের নজরদারি বাড়িয়েছে। এমনকি ভিক্ষুক, বাদাম বিক্রেতা, রিকশাওয়ালা সেজেও নগরজুড়ে বিচরণ করছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।”

তাছাড়া সম্প্রতি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি স্থানে যে সিসিটিভি লাগানো হয়েছে, সেগুলোর মাধ্যমেও কঠোর নজরদারি চলছে বলে তিনি জানান।

সব মিলিয়ে নগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ প্রশাসন পুরোপুরি তৎপর বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশের তৎপরতার পাশাপশি নগর ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নগরীর স্থানীয় বাসিন্দাদেরও দায়িত্ব রয়েছে মন্তব্য করে জেদান আল মুসা বলেন, “প্রতিবেশীর ফাঁকা বাসা-বাড়ির প্রতি নজর রাখতে হবে। তাছাড়া এলাকায় অপরিচিত কারও আনাগোনা দেখা গেলে সেটা পুলিশ প্রশাসনকে জানাতে হবে।”