যশোরের বিভিন্ন এলাকার ক্রেতা-ফড়িয়ারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন তাদের ঈদের দিনের কর্মব্যস্ততার কথা।
শার্শা উপজেলার নাভারন বাজারের চামড়া ক্রেতা এমদাদুল হক বলেন, তার এলাকায় চামড়া ক্রেতার সংখ্যা প্রায় একশ। তারা ফড়িয়ার মাধ্যমে চামড়া সংগ্রহ করেন।
“প্রত্যেক ক্রেতা পাঁচ থেকে সাতজন করে ফড়িয়া নিয়োগ করেছেন। ফড়িয়ারা গ্রামান্তরে ঘুরে ঘুরে চামড়া কেনেন।”
বছরের এই দিনটিতে তাদের আয়রোজগার সবচেয়ে বেশি হয় বলে জানালেন বেনাপোলের চামড়া ক্রেতা বাবর আলী বাবু।
“ঈদ একটি বড় উৎসব হলেও ব্যবসার কারণে দিনটি আমরা উপভোগ করতে পারি না।”
“দিনটিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতে না পারায় অবশ্যই খারাপ লাগে। কিন্তু করার কিছু নেই। বাপ-দাদার ব্যবসা ধরে রাখতে কাজ করে যেতে হচ্ছে,” বললেন চামড়া ক্রেতা লিটন সাহা।
জামতলার চামড়া ক্রেতা ওসমান আলী সাহা এবার চামড়া কেনার জন্য পাঁচ ফড়িয়াকে টাকা দিয়েছেন।
“গত বছর কিনেছিলাম ১০০০, এবার আমার লক্ষ্য ১২০০ চামড়া। তাই নামাজের পরপরই নেমে পড়ি। আমি নিজে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২০০ গরুর চামড়া ও দেড়শ ছাগলের চামড়া কিনেছি। ফড়িয়ারা কতগুলো কিনতে পেরেছে তার হিসাব এখনও পাইনি।”
চামড়ার দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা সরকার নির্ধারিত দামের নিচে কেনে।
“সরকারি দামে চামড়া কিনবেন ট্যানারি মালিকরা। আমি সর্বোচ্চ ২৫০০ আর সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা করে গরুর চামড়া কিনেছি এ বছর।”
ঈদের দিন সকাল থেকেই চামড়া কেনাবেচা শুরু হয় বলে জানান বাগআচড়ার ক্রেতা শেখ সহিদুল ইসলাম।
দাম নির্ধারণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা চামড়া কিনি গরুর দাম হিসেবে। গরুর দাম ৫০ হাজার টাকার ওপরে থাকলে ওই চামড়া আমরা দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে কিনে থাকি।
“বিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকার গরুর চামড়া এক হাজার টাকায় কিনেছি।”
বিকাল নাগাদ তিনি ৭০০ গরুর চামড়া আর ৪০০ ছাগল-ভেড়ার চামড়া সংগ্রহ করেছেন জানিয়ে বলেন, ফড়িয়াদের কাছ থেকে সব চামড়া পাওয়ার পর সঠিক সংখ্যা জানতে পারবেন।
“তবে ফড়িয়াদের লাভটা নগদ। যে যত বেশি চামড়া পাবে, ঈদে তার লাভ থাকবে তত বেশি। তাই ফড়িয়াদের কাছে ঈদ মুখ্য নয়, চামড়ার সংখ্যা বাড়ানোই মুখ্য।”
শার্শার সামটা গ্রামের ফড়িয়া রবিউল ইসলাম বলে, দৌড়াদৌড়ি করেই তার ঈদ কাটে।
“ব্যবসায়ীদের দেওয়া টাকা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করি। যত বেশি দৌড়াব তত বেশি চামড়া পাব। ঈদের কোনো আনন্দ নেই আমাদের। কোরবানির চামড়া সংগ্রহ করেই আমাদের ঈদ পার হয়।”